ভোলায় মা ইলিশ রক্ষায় জেলা প্রশাসনের অভিযান শুরু
কাজী মহিবুল্লাহ আযাদ , আমাদের ভোলা.কম।
সারাদেশের ন্যায় ভোলায় দেশের সম্পদ মা ইলিশ রক্ষায় জেলা প্রশাসনের অভিযান শুরু হয়েছে। আজ থেকে শুরু হওয়া এই অভিযান ৪ নভেরম্বর পর্যন্ত টানা ২২ দিন চলমান থাকবে।
আজ বুধবার (১৪ অক্টোবর) সকালে ভোলা জেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য অধিদপ্তর এর আয়োজনে জেলার তুলাতুলী ঘাটে ইলিশ সম্পদ রক্ষায় প্রজননক্ষম ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২০ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা মাজিস্ট্রেট সুজিত হাওলাদার।
বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আজহারুল ইসলাম, কোস্ট গার্ড জোনাল কমান্ডার দক্ষিণ জোন ভোলা কেপ্টেন এম মঞ্জুর উল করিম চৌধুরী।
এসময় অভিযানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু আবদুল্লাহ, প্রবীণ সাংবাদিক বিটিভির জেলা প্রতিনিধি এম এ তাহের, প্রেস ক্লাব সম্পাদক অমিতাভ রায় অপু, সময় টেলিভিশন প্রতিনিধি নাছির উদ্দীন লিটনসহ ভোলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ ও কোস্ট গার্ডের সদস্য বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক প্রজননক্ষম ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান ২০২০ এর বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা করে অভিযানের শুভ উদ্বোধন করেন। পরে অতিথিরা ভোলার মেঘনা নদীতে অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান শেষে এক আলোচনায় অতিথিরা মা ইলিশ রক্ষায় আমাদের করণীয় বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, আজ ১৪ অক্টোবর থেকে আগামী ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ইলিশ রক্ষায় ইলিশ ধরা থেকে বিরত থাকতে হবে পাশাপাশি আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে ইলিশের সাথে সংশ্লিষ্টদের সচেতন করতে, এই ২২ দিন ভোলা জেলায় ইলিশ ধরা, বিক্রয়, সংরক্ষণ, মজুদ, পরিবহন করা থেকে বিরত থাকতে সবাইকে অনুরোধ করেন।
জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযান পরিচালনা শেষে জেলা প্রশাসক গণমাধ্যমকে বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রীর নিদর্শনা মোতাবেক এবছর আমরা মা ইলিশ রক্ষায় খুব ভালো প্রস্তুতি গ্রহন করেছি। এবছর বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, জেলা পুলিশ, নৌপুলিশ সমন্বিতভাবে প্রত্যেকটি জেলায় ইলিশ রক্ষা কার্যক্রমে অংশ গ্রহন করছে। আমরাও সমন্বিতভাব বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করবো। আমাদের এই জেলায় ১ লক্ষ ২০ হাজার নিবন্ধিত জেলে আছে। আমরা ইতোমধ্যে তাদের মধ্যে ২০ কেজি করে চাল বিতরণ করা শুরু করেছি। আগামীকাল ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এসব ভিজিএফ চাল বিতরণ শেষ করতে প্রত্যেকটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানদের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। যারা এই নির্দেশনা পালনে ব্যর্থ হবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি আমরা সকল জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছি তারা যেনো প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে এই ২২ দিনের মা ইলিশ রক্ষা সফল করতে পারে। প্রত্যেক জন প্রতিনিধি ও নেতৃবৃন্দের সাথে আমারা কথা বলেছি তারা আমাদের সহযোগিতা করছেন। মাননীয় সংসদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ সহ জেলার অন্যান্য আরও ৩ জন সংসদ সদস্য আমাকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন ২২ দিনের এই ইলিশ সম্পদ রক্ষা অভিযানে জোর তৎপরতা চালাতে হবে দিনে ও রাতে অভিযান পরিচালনা করতে হবে যেনো এই নিষিদ্ধ সময়ে কেউ মাছ ধরতে না পারে।
এর আগে অভিযান পরিচালনাকালে মেঘনার সম্ভাব্য ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্রগুলো পরিদর্শন করেন এবং সংশ্লীষ্ট এলাকার জেলেদের সাথে কথা বলেন জেলা প্রশাসক। এসময় মা ইলিশ রক্ষা করতে সকল জেলেদের সহযোগিতা কামনা করে সকল জেলেদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন তিনি। জেলা প্রশাসককে কাছে পেয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে জেলেরা