চোখের পানিতে ভিজে গেল কাঁটাতারের বেড়া

নিউজ ডেস্ক , আমাদের ভোলা.কম।

ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি সীমান্তে অনুষ্ঠিত হলো দুই বাংলার মিলনমেলা। সোমবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দুই বাংলার মানুষকে তাদের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দেয় দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং স্থানীয় প্রশাসন।

বিজিবি ও বিএসএফের বাধা উপেক্ষা করে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে সীমান্তে হাজারো মানুষের ঢল নামে। কিন্তু স্বজনদের ছুঁয়ে দেখার সৌভাগ্য হয় না তাদের। এ সময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। কাঁটাতারের বেড়া দমিয়ে রাখতে পারেনি রক্তের বন্ধনকে। সীমান্তের এপার-ওপার লাখো মানুষের ভিড়ে এলাকা পরিণত হয় মিলনমেলায়।

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দুই বাংলার স্বজনদের পদচারণায় মিলনমেলায় পরিণত হয়। ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার হরিপুর কাড়িগাঁও, কান্ধাল, মলানী, ডাবরী, বেতনা, বুজরুক এবং ভারতের মালদখন্ড, বসতপুর, শ্রীপুর, নারগঁও, কাতারগঞ্জ ও বোররা সীমান্তে ৩৫৫, ৩৫৬নং পিলার থেকে শুরু করে ৩৭২নং পিলার এলাকায় সীমান্তের ১০টি পয়ন্টে কাঁটাতারের এপার-ওপারে দুই দেশের মানুষ উপস্থিত হয়।

প্রতি বছর দুই দেশের স্বজনরা ভিড় জমায় ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার এসব সীমান্ত এলাকায়। দেখা ও কথা না হওয়া পর্যন্ত সকাল থেকে কাঁটাতারের দুই পাড়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন দুই দেশের স্বজনরা।

সকাল ১০টার পর স্বজনদের ভিড় জমতে শুরু করে সীমান্তের কাঁটাতারের পাশে। গেট না খুললেও এপারে-ওপারে দাঁড়িয়ে স্বজনদের দেখা ও কথা হয়। আদান-প্রদান হয় নানা রকমের খাদ্য সামগ্রী।

স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে আসা রানীশংকৈল উপজেলার বাসিন্দা কুলসুম বেগম (৪৫) বলেন, আর্থিক সঙ্কটের কারণে পাসপোর্ট ও ভিসা করতে পারি না। তাই প্রতি বছর আমার বোন আঞ্জুমারাকে দেখতে এই দিনে সীমান্তে আসি। এবারও আমার বোনের দেখা পেয়েছি।

ঠাকুরগাঁও জেলা সদর এলাকার বাসিন্দা পুলন চন্দ্র রায় (৬৫) বলেন, ১০ বছর আগে আমার মেয়ে গিতা রানীর বিয়ে হয় ভারতের মাল্দা জেলার রতুয়া থানার হরিপুর গ্রামে। বিয়ের পর এ প্রথম মেয়ের দেখা পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ি। পরে মেয়ে ও জামাইকে কাপড় ও মিষ্টি দিয়ে আনন্দ পেয়েছি।

ভারতের স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে আসা জয়পুর হাটের তসলিমা নাসরিন বলেন, ১২ বছর আগে আমার ছোট বোন বিউটির বিয়ে হয় ভারতের গোয়ালপুকুর থানার পাঁচঘরিয়া গ্রামে। বিয়ের পর আর কথা হয়নি তার সঙ্গে। কিন্তু আজ বোনের সঙ্গে কাঁটাতারের এপার-ওপারে দাঁড়িয়ে কথা বলেছি। কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে মিষ্টি ও শাড়ি দিতে পেরে আনন্দ পেয়েছি। মিলনমেলায় আসা অনেকে তাদের আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং কথা বলেছেন। বিভিন্ন জিনিসপত্র আদান-প্রদান করেছেন।
প্রসঙ্গত, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও দুই দেশে বসবাসরত স্বজনরা দীর্ঘদিন পর প্রিয়জনকে কাছে পায়। দীর্ঘদিন পর প্রিয়জনকে কাছে পাওয়ায় আনন্দ অশ্রুতে ভেসে যায় সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া।

(সূত্র – জাগো নিউজ ২৪)

ফেসবুকে লাইক দিন

আর্কাইভ

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১

সর্বমোট ভিজিটর

counter
এই সাইটের কোন লেখা অনুমতি ছাড়া কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ!
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।