মানসিক প্রতিবন্ধীর সেবা করে প্রশংসায় ভাসছেন ভোলার পুলিশ কর্মকর্তা

ইয়াছিনুল ঈমন, সম্পাদক, আমাদের ভোলা।

ভোলার উপ-শহর বাংলা বাজারের মাছ বাজার এলাকায় রাস্তায় পাশে শুয়ে আছেন জান্নাতুল নামে ৪০ বছর বয়সী এক মানসিক প্রতিবন্ধী। তার শরীরের এক অংশ পচে পোকা হয়ে গেছে। ক্ষতস্থান হতে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। পাশ দিয়ে মানুষজন নাক ও মুখ চেপে হেঁটে চলে যাচ্ছে। সেদিকে কারো কোনো নজর নেই। কারণ সে পাগল। তার স্থান রাস্তার পাশেই।

গত শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে ১১টার দিকে বাংলাবাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা সে পথ দিয়ে যাওয়ার সময় বিষয়টি তার নজরে আসে। তাৎক্ষণিক সেখানে থাকা এক ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে একটি ওষুধের দোকান থেকে ড্রেসিং করার মালামাল নিয়ে পরিচয়হীন ওই মানসিক প্রতিবন্ধীকে নিজ হাতে পচা জায়গা পরিষ্কার করে রাস্তা থেকে তুলে হাসপাতালে ভর্তি করান। বর্তমানে ওই নারী ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

তার এ মানবিক কাজের কিছু ছবি ও ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে প্রশংসিত হন এ পুলিশ কর্মকর্তা। গত দুই দিন ধরে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা তাকে নিয়ে বিভিন্ন ইতিবাচক মন্তব্যও করেন। কেউ কেউ তাকে মানবিক পুলিশ নামেও আখ্য দেন।

এসআই গোলাম মোস্তফা জানান, শুক্রবার সকালে আমি ফাঁড়ি থেকে বের হয়ে মাছ বাজার এলাকায় গেলে সেখানে রাস্তার পাশে মাঝ বয়সী এক নারীকে রাস্তার পাশে শুয়ে থাকতে দেখেন। তার শরীরের একটি অংশে পচন ধরেছে। ক্ষতস্থান থেকে পোকা বের হচ্ছে। বিষয়টি তার মনে নাড়া দেয়। তখন সেখানে থাকা পলাশ নামে এক ব্যক্তিকে সাথে নিয়ে স্থানীয় একটি ওষুধের দোকান থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার কিছু সরঞ্জাম নিয়ে দুই জনে ওই নারীর ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে। তার সমস্ত শরীরের ময়লা কাপড় খুলে পাশের একটি বাসা থেকে পুরাতন কাপড় এনে তা পারিয়ে দেন। পরে একটি অটোরিকশা ভাড়া করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসাপাতালে ভর্তি কারোনর পাশাপাশি গত দুই দিন ধরে নিয়মিত তার খোঁজ নেন এ পুলিশ কর্মকর্তা। চিকিৎসকদের সাথেও সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন তিনি।

তিনি আরো জানান, এ পাগল নারীকে গত কয়েক দিন ধরেই বাংলা বাজারে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গেছে। কে বা কারা সম্ভবত তার শরীরের পেছনের অংশে গরম পানি দিয়ে ঝলসে দিয়েছে। আর সেখান থেকেই শরীরে পচন ধরেছে। তার মানসিক সমস্যা থাকায় সে ঠিকমত কথা বলতে পারছে না। তাই তার পরিচয়ও নেয়া সম্ভব হয়নি।

গোলাম মোস্তফা তার এ কাজে সহযোগিতা করায় সদর হাসপাতালে দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্য মামুন ও ঠিকাদার পলাশসহ সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। একই সাথে পাগল ওই নারীর সুস্থতার জন্য সকলের কাছে দোয়া চেয়েছেন এই পুলিশ কর্মকর্তা

ফেসবুকে লাইক দিন

আর্কাইভ

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১

সর্বমোট ভিজিটর

counter
এই সাইটের কোন লেখা অনুমতি ছাড়া কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ!
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।