প্রধানমন্ত্রীর নববর্ষের শুভেচ্ছা কার্ডে জায়গা করে নিলো ভোলার তানভীরের আকাঁ ছবি

জাফর ইকবাল, আমাদের ভোলা.কম।

মো: তানভীর হোসেন। বয়স ১৪। জন্ম ভোলার বাপ্তা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের চাচড়া গ্রামে। জন্মের এক বছর পরেই ভাইরাস জ্বরে আক্রান্ত হয় তানভীর। পিঠে টিউমার হওয়ার পর অপারেশন করানো হলে তার দুপা বেঁকে যায়। অভাব অনটনের সংসারে তানভীর হয়ে উঠে সংসারের বোঝা। তার বাবা মা তাকে ছোটবেলায়ই ভোলা চিলড্রেন স্পেশাল স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়। সেখান থেকেই তার স্বপ্ন দেখা শুরু। সমাজের বোঝা নয়, এ সমাজকে কিছু উপহার দেওয়ার জন্মই তানভীরের সংগ্রাম শুরু রং তুলি ও কাগজের সাথে। নিজের একাকিতœ দূর করতেই ছোট বেলা থেকে রং তুলির সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক। ছবি আকাঁ আঁকির প্রতি তার এক অন্যরকম ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠে। যেন রং তুলিই তার পরম বন্ধু। স্বপ্ন দেখে একজন বড় চিত্রশল্পী হওয়ার। সেই স্বপ্নকে বুকের ভেতর লালন করে এগিয়ে চলছে তানভীর হোসেন। ছবি আকা যার নেশা, তাকে ধমিয়ে রাখে কে? ছোট বেলা থেকেই অসাধারন সব চিত্র একে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সে। ছবি আকা যার নেশা সেই তানভীর হোসেন গ্রাম বাংলার অসাধারন একটি ছবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১৯ সালের ইংরেজী নববর্ষ শুভেচ্ছা কার্ডে জায়গা করে নেয়। চিত্রটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন জয় করে নিয়েছেন। তার গ্রাম বাংলার এই অসাধারন ছবিটি তাকে পৌঁছে দেয় স্বপ্ন চূড়ায়।
ভোলার বাপ্তা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড চাচড়া গ্রামের রাজ মিস্ত্রী তছির এর ছেলে তানভীর। তার মা তানিয়া একজন গৃহিনী ৩ ভাই বোনদের মধ্যে সেই বড়। তারপর থেকে সে ঠিক মতো হাঁটতে পারে না হাঁটতে হলে তাকে সাহয্য নিতে হয় অন্য লোকের অথবা লাঠির। বাবা তছির আহমেদ ছেলে তানভীরকে ছোটবেলায়ই ভোলা চিলড্রেন স্পেশাল স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়। সে এবার ৭ম শ্রেনীতে লেখাপড়া করছে। ছোটবেলা থেকেই ছবি একে আসছেন তানভীর। তার আঁকা গ্রাম বাংলার অসাধারন একটি ছবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১৯ সালের ইংরেজী নববর্ষ শুভেচ্ছা কার্ডে জায়গা করে নেয়। প্রধানমন্ত্রীর এই কার্ডের জন্য সারা বাংলাদেশ থেকেই বিশেষ শিশুদের আকাঁ ছবি যায়। এবার এই কার্ডে ঠাই হয়েছে তানভীরের আঁকা ছবিটি। এই জন্য তানভীরকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রান তহবিল থেকে সম্মানী হিসাবে ১লক্ষ টাকা প্রদানের ঘোষনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে।
আজ মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) বিকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে তানভীরের নামে আসা চিঠি তুলে দেন ভোলা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মাহমুদুর রহমান, জেলা পরিষদের সচিব মামুন আল ফারুক, ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: কামাল হোসেন, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো: ইউনুছ, ভোলা স্পেশাল চিলড্রেন স্কুলের পরিচালক জাকির হোসেন।
জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক তানভীরের হাতে চিঠির সাথে সাথে ফুল তুলে দিয়ে তানভীরকে শুভেচ্ছা জানান। তানভীরের পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গিয়ে সেখান থেকে সম্মানী বাবদ ১লক্ষ টাকার চেক সংগ্রহ করতে হবে।
ভোলা জেলা প্রাশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, তানভীরের এই সাফল্যে আমরা অনেক খুশি ও জেলার মুখ উজ্জল করেছে।
তানভীরের শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন, তানভীর খুব ভালো ছবি আঁকে সে খুব মেধাবী ছাত্রও বটে। তার এই কৃতিত্বে আমাদের স্কুল গর্বিত কারন সে আমাদের স্কুলের শিক্ষার্থী।
তানভীরের মা তানিয়া বলেন, ছেলের স্বপ্ন বড় কিন্তু ও তো হাঁটতে পারে না। তবে আমরা ওরে বড় কিছু করতে চাই ভবিষ্যতে। ও আমাদের মুখ উজ্জল করবে এটাই চাই। সকলে ওর জন্য দোয়া করবেন।

ফেসবুকে লাইক দিন

আর্কাইভ

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১

সর্বমোট ভিজিটর

counter
এই সাইটের কোন লেখা অনুমতি ছাড়া কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ!
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।