পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর জাল করা এসএসসি’র প্রবেশপত্র নিয়ে তোলপাড়

ডেস্ক রিপোট, আমাদের ভোলা.কম।

শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর জাল করে তৈরী করা প্রবেশপত্রের মাধ্যমে বরিশালের আগৈলঝাড়ায় এক শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছে। উপজেলা পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার অভিযুক্ত ওই পরীক্ষার্থী এবং তার অভিভাবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিষয়টি বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও জেলা প্রশাসককে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য শনিবার দুপুরে পত্র প্রেরণ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে সর্বত্র ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।

বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মোঃ আনোয়ারুল আজিম বলেছেন, নির্বাহী কর্মকর্তার রিপোর্ট পেলেই অসাধু ওই চক্রটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সূত্রমতে, উপজেলার বাকাল নিরঞ্জন বৈরাগী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই গ্রামের দীনেশ দাস ও সবিতা রানী দাসের পুত্র সুব্রত দাস স্কুলের টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ অনলাইনে সুব্রতর ফরম পুরন করতে পারেনি। কিন্তু সুব্রত ফরম পুরণ না করলেও বোর্ডের একটি চক্রের মাধ্যমে ওই বিদ্যালয়ের প্যাড, প্রধানশিক্ষক পুলিন বিহারী জয়ধরের স্বাক্ষর ও সিল জালিয়াতি করে স্কুলকে ফরম পুরণের অনুমতি প্রদানের কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট স্কুলে গিয়ে প্রদর্শন করে।

প্রধানশিক্ষকের জাল কাগজপত্র দেখে সন্দেহ হলে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা বোর্ডকে বিষয়টি লিখিতভাবে অবহিত করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাসও পৃথকভাবে শিক্ষা বোর্ড ও থানাকে লিখিতভাবে জালিয়াতির বিষয়টি জানান। এ ঘটনার পরে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মোঃ আনোয়ারুল আজিম শিক্ষার্থী সুব্রত দাসের প্রবেশপত্র বাতিল করার নির্দেশ প্রদান করেন।

তার সে নির্দেশনা উপেক্ষা করে অসাধু ওই চক্রের হাত ধরে সুব্রতর নামে কর্মকর্তাদের নামের সিল ও স্বাক্ষর জাল করে ব্যাবসায় শিক্ষা বিভাগের নিয়মিত ছাত্র হিসেবে প্রবেশপত্র ইস্যু করা হয়। যার প্রবেশপত্র সিরিয়াল নং-১৯০৩৩০১০। রোল নং-৯০০৬৯১, রেজিষ্ট্রেশন নং-১৬১৫৪৪৫৭০৩। প্রবেশপত্র জালিয়াতির বিষয়টি প্রধানশিক্ষক পুলিন বিহারী জযধর বোর্ডকে জানালে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর আনোয়ারুল আজিম বিষয়টি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাসকে ফোনে অবহিত করে ব্যবস্থা নিতে বলেন।

বোর্ডের নির্দেশ পেয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা পরীক্ষার প্রথমদিন শনিবার শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে প্রবেশপত্র যাচাই বাছাই করে পরীক্ষার্থী সুব্রত দাসের সাথে কথা বলেন। সুব্রত জানায়, টেস্ট পরীক্ষায় সে অর্কৃতকার্য হয়েছিলো। জালিয়াতির বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। প্রবেশপত্রসহ আনুসাঙ্গিক কাগজপত্র সম্পর্কে তার মা সবিতা দাস জানেন। তাৎক্ষনিকভাবে সবিতাকে সেখানে হাজির করা হলে সবিতা ঘটনার সাথে জড়িত বোর্ডের কর্মচারী ফরিদ উদ্দিন ও ভোলার লালমোহন স্কুলের শিক্ষক মমিন উদ্দিন তার ছেলের ফরমপুরন ও প্রবেশপত্র দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন বলে জানায়।

উল্লেখ্য, উপজেলা সদরের ভেগাই হালদার পাবলিক একাডেমীর মানবিক বিভাগের দুই শিক্ষার্থী রাব্বানী সরদার ও আকাশ সরকারের জন্য একই উপায়ে ফরম পুরনসহ প্রবেশপত্র তৈরী করা হয়। ওই দুই শিক্ষার্থীরা জানায়, তাদের কাছ থেকে সবিতা রানী দাস টাকা নিয়ে তাদের জন্য পরীক্ষা দেবার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস জানান, তিন শিক্ষার্থীর ফরম পুরণ ও প্রবেশপত্র জালিয়াতির বিষয়ে শনিবার দুপুরে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও জেলা প্রশাসককে লিখিতভাবে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মোঃ আনোয়ারুল আজিম বলেন, নির্বাহী কর্মকর্তার রিপোর্ট পাবার পরে অসাধু চক্রটি ধরতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, এরকম ঝালকাঠিতে ১০টি ও পাথরঘাটায় ২৮টি প্রবেশপত্র বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিলেও অভিযোগ প্রমানিত হবার পরে তাদের ফলাফল স্থগিত বা বাতিল করে আইনের আওতায় আনা হবে।

সুত্র – জাগো বরিশাল

ফেসবুকে লাইক দিন

আর্কাইভ

মে ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« এপ্রিল    
 
১০
১১১২১৩১৪১৫১৬১৭
১৮১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭২৮২৯৩০৩১

সর্বমোট ভিজিটর

counter
এই সাইটের কোন লেখা অনুমতি ছাড়া কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ!
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।