মীর মোশারেফ অমি`র হাফ সেঞ্চুরি
ভোলা প্রতিনিধি।
মানুষকে ভালোবেসে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন ভোলার যুবক, সমাজ কর্মী সংগঠক মীর মোশারেফ অমি। রোগীর প্রাণ বাঁচাতে তিনি রক্ত দিয়ে চলেছেন ১৭ বছর ধরে। গত ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত রক্ত দিয়েছেন ৫০ বার। এত অল্প সময়ে এতবার স্বেচ্ছায় রক্তদান আমাদের দেশে অনেকটা বিরল ঘটনাই।
ভোলার তরুন সাংবাদিক ইয়ামিন হাওলাদার এর রক্তদান সংক্রান্ত ফেসবুক স্টাটাস দেখে ৫০ তম রক্তদানে এগিয়ে আসেন। এরপর ভোলার ল্যাবএইড মেডিকেল সেন্টার এ একজন চিকিৎসাধীন প্রসূতি মায়ের ডেলিভারির জন্য রক্তদান করেন। নিজের সহধর্মিণীকে সাথে নিয়ে ৫০ বারের মত আজ রক্ত দিয়েছেন অমি।
পেশায় ব্যবসায়ী মীর মোশারেফ অমি’র বাসা ভোলা সদরে। তাঁর গ্রামের বাড়ি বোরহান উদ্দিন এর টগবী ২ নং ওয়ার্ডের মীর সাহেবের বাড়ি। প্রথম কোথায় রক্ত দিয়েছিলেন এ প্রশ্নে জানান শুরুর রক্তটা তিনি দিয়েছিলেন বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির ব্লাড ব্যাংকে।এরপর ভোলায় যুব রেডক্রিসেন্টে কাজ করাকালীন সরাসরি রোগীদের রক্ত দেওয়া শুরু করেন।জাতীয় সদর দপ্তর যুব রেডক্রিসেন্টে ও কাজ করা কালীন নিয়মিত রক্তদান করতেন।বিভিন্ন দিবসে ব্লাড গ্রুপিং, ব্লাড সংগ্রহের কাজে বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্টের
ক্যাম্পে তিনি নিয়মিত স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে অংশগ্রহণ করতেন।বিভিন্ন সময় রক্তদাতা সংগঠন বাঁধন এবং কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে রক্ত দেন। এছাড়াও তার প্রতিষ্ঠিত সংগঠন আইসিডিএফ, এবং ব-দ্বীপ ফোরাম এর মাধ্যমে রক্তদান যেমনি করেছেন তোমনি ব্লাড সংগ্রহ করে দিয়েছেন প্রায় তিনশত রোগীর। তাঁর রক্তের গ্রুপ ‘বি’ পজেটিভ।
মীর মোশারেফ অমি জানান, তিনি পরিচিত ও অপরিচিত অনেককেই রক্ত দিয়েছেন। বন্ধু,বান্ধব,আত্নীয় স্বজন এবং সংগঠন এর ছেলে মেয়েরা রক্তদানে তাঁর উৎসাহের কথা জানে। কাজেই প্রয়োজনে তারাও যোগাযোগ করে তাঁর সঙ্গে। অমি বলেন, কাউকে রক্ত দিতে পারাটাই একটা আনন্দময় অভিজ্ঞতা। তাঁর রক্ত দিয়ে কারো জীবন রক্ষা পাচ্ছে, এটা ভাবতেই ভালো লাগে তাঁর। তবে রক্তদান করতে গিয়ে তিনি অনেক ভাল ব্যবহার যেমন পেয়েছেন আবার অনেক বাজে অভিজ্ঞতার স্বীকার ও তিনি হয়েছেন তবে সেইটা তিনি কখনো মনে রাখেন নি,এমন ও হয়েছে রক্তদান করতে গিয়ে নিভৃতে রোগীর চিকিৎসার ব্যয়ভার ও তিনি কাঁধে তুলে নিয়েছেন।প্রচার বিমুখ এই মানুষটি কখনোই এসব প্রচার ও করেননি এবং কারো সহযোগিতা ছাড়া একক অর্থায়নে এসব কার্যক্রম করে গেছেন।যাদের রক্ত দেন,এবং চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন তাদের বেশির ভাগের সঙ্গেই পরে আর কোনো যোগাযোগ থাকে না। তিনি মনে করেন, জীবন বাঁচানোই প্রথম কাজ।