অতিথি পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত ‘চর কুকরি মুকরি’
অাকতারুজ্জামান সুজন, অমাদের ভোলা.কম।
শীতের আমেজ এখন প্রকৃতিতে। শীতকাল এলেই বংলাদেশ থেকে তিন-চার হাজার মাইল দূরের শীতপ্রধান অঞ্চল সূদুর সাইবেরিয়া থেকে প্রাকৃতিক নিয়মে অতিথি পাখি আসে। শীত মৌসুমে বাংলাদেশে আসা অতিথি পাখির প্রায় অর্ধেক আসে দ্বীপ ভোলা উপকুলের পলিময় সমতলে। অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হচ্ছে ভোলার চরফ্যাসন উপজেলার ভোলার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষে মেঘনা ও তেতুঁলিয়া নদীর মোহনায় চরফ্যাশন উপজেলায় অবস্থিত এক নয়নাভিরাম চর, যার নাম চর কুকরি মুকরি।
অন্যান্য বছরের মত এবারো ভোলার দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের কোলঘেঁষা চরকুকরি মুকরি, চর শাহজালাল, চরশাজাহান, চর পিয়াল, আইলউদ্দিন চর, চরনিজাম, আন্ডার চর, দমার চর, ডেগরারচরসহ শতাধিক ডুবোচরে অথিতি পাখি অাসতে শুরু করছে। এসব চরে খাবার সংগ্রহ শেষে বিপদে আশ্রয় নেয় পার্শ্ববর্তী চর কুকরি মুকরির ম্যানগ্রোভ বাগানে।
চর পাতিলার মাঝি অালাউদ্দিন, মাছ ব্যাবসায়ী রফিক ও ছাত্র শাহিন জানান, চর কুকরি মুকরী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অাবুল হাসেম মহাজনের নির্দেশ অনুযায়ী,এই পাখিগুলোকে আমরা কোনো শিকারীদের কে মারতে দেই না। আমরা পাখিগুলোকে দেখে রাখি। প্রতিবছর এই সময় এখানে অাসতে শুরু করে হাজার হাজার অতিথি পাখি এবং গরমকালে চলে যায়।
চর কুকরি মুকরি বাজারের দোকানী সালাম জানান, চরকুকরি মুকরিতে অনেক পর্যটকও আসে। তারা পাখি দেখে অনেক আনন্দ পায়।
প্রকৃতি প্রেমি ও পর্যটক শামিম অাহম্মেদ বলেন, চর কুকরি মুকরিতে রং বেরঙয়ের পাখির ঝাঁকে ঝাঁকে এমন ছুটোছুটি, মন কেড়ে নিবে যে কোন মানুষের, এছাড়া ও নাম না জানা হাজার রকমের গাছের সাথে সারি সারি নারিকেল গাছ আর বিশাল বালুকাময় চরটি দেখে অামার কাছে মনে হয়েছিলো অামি কোন এক সৈকত পাড়ে অাছি।
চর কুকরি-মুকরি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হাসেম মহাজন বলেন, ‘অতিথি পাখি রক্ষায় এলাকার সমস্ত মানুষকে মাইকিং করে দিই। যাতে তারা পাখিদের নিধন না করে। এছাড়াও আমাদের গ্রাম পুলিশসহ সব সময় টহল দেন।
শীত থেকে প্রাণ বাঁচাতে আসা পাখিরাই এখন সাগর-সবুজ দেখতে আসা পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ হয়ে উঠেছে। তাই এদের রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানালেন এ জনপ্রতিনিধি।
ভোলা উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো.ফরিদ উদ্দিন মিঞা বলেন, শীতপ্রধান অঞ্চল থেকে আসা অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর ভোলার উপকূলীয় চরাঞ্চলগুলো। শীতের হিমেল হাওয়া শুরুর সাথে সাথে নিজেদের জীবন বাঁচাতে অতিথি দল ঝাঁক বেঁধে হাজির হয় এ অঞ্চলে। সাগরকূলের ডুবোচরগুলো পরিণত হয়েছে অতিথি পাখির অভয়ারণ্যে। প্রায়ই দুর্বৃত্তদের দেয়া বিষটোপ ও মরণফাঁদে প্রাণ হারায় এসব অতিথি পাখি। তাই শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর সহায়তায় অতিথি পাখি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি অারো বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ ও কোস্ট গার্ডের সঙ্গে সমন্বয় করে এবং তাদের সহযোগিতা নিয়ে অতিথিদের পাখিদের কেউ নিধন না করে সেই জন্য আমাদের টহল অব্যাহত থাকবে।