ভোলায় সংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা: পুলিশ সুপারের কাছে সুষ্ঠ তদন্তের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥

ভোলায় সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। রোববার (২৭ নভেম্বর) বিকালে নেতৃবৃন্দরা জেলা পুলিশ সুপারের সাথে এই সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

সাক্ষাতে তারা ভোলার প্রবীণ সাংবাদিক দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক ও ভোলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ শওকাত হোসেন, দৈনিক নয়াদিগন্ত ও এসএটিভি জেলা প্রতিনিধি এডভোকেট সাহাদাত শাহিন, ৭১টিভির সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মুজাহিদুল হক রুমেনসহ ৬জনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেন। সাংবাদিকরা পুলিশ সুপারকে জানান, পরানগঞ্জের ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী মিজানুর রহমান ফোরকান, বাহিনী জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয় সাংবাদিকরা মিজানুর রহমানের স্ত্রী আয়শা আক্তারের উপর হামলা করেছে। অথচ ওই নারীর উপর হামলার কোন ঘটনা ঘটেনি। ভূমিদস্যু মিজানুর রহমানের স্ত্রীর দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার ঘটনার সময় আলহাজ্ব শওকাত হোসেন ঢাকায় সাংবাদিকদের একটি সভায় উপস্থিত ছিলেন। এড. সাহাদাত শাহিন আদালতে মামলা পরিচালনা করছিলেন। এছাড়াও মুজাহিদুল হক রুমেন ঢাকায় ৭১টিভিতে কর্মরত ছিলেন। একই মামলায় অভিযুক্ত আলহাজ্ব শওকাত হোসেনের ছেলে মোঃ শোয়েব ঢাকায় আড়ং কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। পুলিশ সুপার এ ধরনের মিথ্যা মামলায় সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের যুক্ত করায় হতভাগ হন। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হবে বলেও জানান।

এসময় সাংবাদিকরা পুলিশ সুপারকে জানান, সবচেয়ে আশ্চার্যের বিষয় হচ্ছে ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী মিজানুর রহমান ফোরকান, আরাফাত রহমান রাহাত, মোঃ ফরহাদ, ওয়াইবুর রহমান আরাত বাহিনী ওই দিন নিজেরাই তথাকথিত মিথ্যা মামলার অভিযুক্ত মুজাহিদুল হক রুবেলকে হত্যার চেষ্টায় বেধড়র মারধর করে। রুবেল বর্তমানে ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। মিজানুর রহমান ফোরকান বাহিনী রুবেল হত্যা চেষ্টার ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্যেই মিথ্যা মামলার এই নাটক সাজিয়েছে। মিথ্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভোলা থানার এসআই জসিম উদ্দিন মামলার বাদীপক্ষ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে মনগড়া তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার পায়তারা করছে বলে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ জানান। তারা উক্ত মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন এবং সুষ্ঠু তদন্তের দাবী জানান। জেলা পুলিশ সুপার সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের কথা শুনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন এবং সুষ্ঠু তদন্ত হবে বলে আশ্বাস দেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, ভোলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম হাবিবুর রহমান, দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক আলহাজ্ব মুহাম্মদ শওকাত হোসেন, ইন্ডিপেডেন্ট টিভির জেলা প্রতিনিধি এডভোকেট নজরুল হক অনু, ভোলা প্রেসক্লাবের সম্পাদক অমিতাভ রায় অপু, এটিএন বাংলা ও দৈনিক ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি আহাদ চৌধুরী তুহিন, দৈনিক নয়াদিগন্ত ও এসএটিভির জেলা প্রতিনিধি এডভোকেট সাহাদাত শাহিন, সময় টিভি ও দৈনিক সমকালের জেলা প্রতিনিধি নাসির লিটন, দৈনিক ভোলার বানীর সম্পাদক মোঃ মাকসুদুর রহমান, দৈনিক খোলা কাগজের জেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান, একুশে টিভির জেলা প্রতিনিধি মেজবাহউদ্দিন শিপু, জিটিভি জেলা প্রতিনিধি এম হেলাল উদ্দিন, উপকূল প্রেসক্লাবের সভাপতি বশির আহমেদ, দৈনিক কালবেলা জেলা প্রতিনিধি প্রভাষক মনিরুল ইসলাম, যমুনা টিভি জেলা প্রতিনিধি জুয়েল সাহা, দৈনিক ভোরের পাতা জেলা প্রতিনিধি ফরহাদ হোসেন, দৈনিক তৃতীয়মাত্রা জেলা প্রতিনিধি ইয়াছিনুল ইমন, ভোলানিউজ২৪ডটকম এর নির্বাহী সম্পাদক রাকিব উদ্দিন অমি, দৈনিক আজকের ভোলার সহযোগী সম্পাদক এম শাহরিয়ার জিলন, আনন্দ টিভি জেলা প্রতিনিধি এম রহমান রুবেল, দৈনিক আজকের ভোলার স্টাফ রিপোর্টার এম মইনুল এহসান, রাকিব হাওলাদার, পারভেজ বাঁধন প্রমুখ।

প্রকাশঃ ভোলার পরানগঞ্জ বাজারের ইলিশা অংশে মুজাহিদুল ইসলাম রুবেল ওয়াশি সূত্রে পাওয়া জমিতে দোকান ঘর নির্মান করে ভোগদখলে ছিলেন। সম্প্রতি রাস্তার পাশে সরকারি ড্রেন নির্মানের কারণে রুবেল তার দোকানঘর ভেঙ্গে অন্যত্র সরিয়ে রাখে। ড্রেনের কাজ শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) রুবেল শ্রমিক নিয়ে উক্ত স্থানে দোকানঘর নির্মান করতে গেলে মিজানুর রহমানের নির্দেশে সন্ত্রাসী আরাফাত রহমান রাহাত, মোঃ ফরহাদ, ওয়াইবুর রহমান রুবেলের কাছে ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। দাবীকৃত চাঁদা না দিলে রুবেলকে সেখানে দোকানঘর উত্তোলন করতে দিবে না বলে প্রাণনাশসহ বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দেয় সন্ত্রাসী রাহাত ও ফরহাদ বাহিনী। রুবেল সন্ত্রাসী রাহাত বাহিনীর দাবীকৃত ১ লক্ষ টাকা চাঁদা দিতে অস্বীকার করে। মোঃ মিজানুর রহমানের নির্দেশে এসময় সন্ত্রাসী আরাফাত রহমান রাহাত, মোঃ ফরহাদ, ওয়াইবুর রহমান আরাত, মাহাবুবুর রহমান এনায়েত ধাড়ালো অস্ত্র, রড, লাঠিসোটা দিয়ে মুজাহিদুল ইসলাম রুবেলকে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। সন্ত্রাসীদের রডের আঘাতে রুবেলের মাথা, ঘাড়ে, গালে, পিঠে, রানে, হাতে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়। রুবেলের আত্মচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে তারা রুবলকে উদ্ধার করতে পারেনি। পরে ভোলা থানার ওসি শাহীন ফকিরকে জানালে তিনি এসআই মুকবুলের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টীম ঘটনাস্থলে পাঠান। পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর হামলাকারী সন্ত্রাসী বাহিনী রুবেলর সাথে থাকা নগদ টাকা, মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশের সহযোগীতায় স্থানীয় লোকজন রুবেলকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। রুবেলের মাথায় প্রচন্ড আঘাত পাওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে রুবেল ঢাকায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এই ঘটনায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার মুজাহিদুল ইসলাম রুবেল বাদী হয়ে ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী মোঃ মিজানুর রহমান, আরাফাত রহমান রাহাত, মোঃ ফরহাদ, ওয়াইবুর রহমান আরাত, মাহাবুবুর রহমান এনায়েত বিরুদ্ধে ভোলা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী মিজানুর রহমান ফোরকান তার স্ত্রী আয়শা আক্তারকে দিয়ে একটি মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন ঘটনা সাজিয়ে ভোলার প্রবীন সাংবাদিক দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক ও ভোলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ শওকাত হোসেন এবং দৈনিক নয়াদিগন্ত ও এসএটিভি জেলা প্রতিনিধি এডভোকেট সাহাদাত শাহিন, ৭১টিভি সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার মুজাহিরুল হক রুমেনসহ ৬জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। যার মামলা নং এমপি-৬১৪/২২ইং। সাংবাদিকসহ ৬জনের বিরুদ্ধে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন ঘটনা সাজিয়ে মিথ্যা মামলা দায়ের করায় ভোলা সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

 

ফেসবুকে লাইক দিন

আর্কাইভ

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  

সর্বমোট ভিজিটর

counter
এই সাইটের কোন লেখা অনুমতি ছাড়া কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ!
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।