ভেদুরিয়ার ভূমিদস্যু নাজিমউদ্দিনের হাত থেকে বাঁচতে ভুক্ত ভোগীদের মানববন্ধন, বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার ॥
ভোলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ভূমিদস্যু ও জলদস্যু নাজিম উদ্দিন গংদের হাত থেকে বসত ভিটা রক্ষা, হয়রানীমূলক মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি ও জীবনের নিরাপত্তার দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয় অসহায় ভুক্তভোগীরা। রবিবার (২৮ নভেম্বর) বিকালে সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ব্যাংকের হাট বাজারে ‘ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী’র আয়োজনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন শেষে ভূমিদস্যু নাজিম উদ্দিনে বিচার দাবী, মিথ্যা মামলা ও হয়রানী থেকে মুক্তি, জমি উদ্ধার ও জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ব্যাংকের হাট বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন, ভুক্তভোগী রিজিয়া খাতুন, মাহমুদা খাতুন, রহিমা খাতুন, জাহানারা খাতুন, মোঃ জামাল হোসেন, মোঃ সুমন, আবুল কালাম, নুর মোঃ মাঝিসহ এলাকাবাসী।

মানববন্ধনে ভুক্তভোগী মোঃ জামাল হোসেন বলেন, আমার নানা আবদুল মান্নানের ভেদুরিয়া চর রমেশ মৌজার ৭৬নং খতিয়ানের ১৭৩৮ ও ১৭৩৯ দাগের ডোবা ও বাড়ীর ৩৫ শতাংশ জমি রয়েছে। ওই জমির ওয়ারিশসূত্রে মালিক আমার নানা আঃ মান্নানের মেয়ে রিজিয়া খাতুন, মাহমুদা খাতুন, রহিমা খাতুন, জাহানারা খাতুন। আমার নানা মারা যাওয়ার পর তার মেয়েরা পৌনে ৯ শতাংশ করে জমির মালিক হয়। এদের মধ্যে জাহানারা বেগম মৃত ইদিসের ছেলে নাজিম উদ্দিনের কাছে সোয়া পাঁচ শতাংশ জমি বিক্রি করেন। এ সোয়া পাঁচ শতাংশ জমির দলিল নিয়ে ক্ষমতা ও টাকার জোরে ভূমিদস্যু নাজিম উদ্দিন ও তার ভাই নুরদ্দিন, সালাউদ্দিন, মোসলেহ উদ্দিন, নোমান আরো প্রায় ২০ শতাংশ জমি দখল করে নেয়। আমরা ওই জমি নাজিমউদ্দিনের কাছ থেকে ফেরৎ চাইলে তারা নানা টালবাহানা শুরু করে। এক পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ভেদুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে মামলা দেই। মামলার এক মাসের মাথায় নাজিমউদ্দিন কাগজপত্র নিয়ে হাজির না হওয়ায় পরিষদ থেকে মামলাটি খারিজ করে দেয়। পরবর্তীতে ২০২০ সালের মাঝামাঝি সময়ে নাজিমউদ্দিন গংরা জমির গাছ কাটতে গেলে আমরা বাঁধা দেই। ফাঁড়ির পুলিশ এসে গাছ কাটা বন্ধ করে দেয় এবং উভয় পক্ষকে জমির কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলে। পরে ফাঁড়ির পুলিশ ও স্থানীয় গণ্যমান্যদের উপস্থিতিতে কাগজপত্র নিয়ে বসলে নাজিউদ্দিন গংরা আমার খালা জাহানারা খাতুন থেকে ক্রয় করা সোয়া পাঁচ শতাংশ জমির কাগজ দেখাতে পারে। কিন্তু বাকী জমির কাগজ দেখানোর জন্য তিন বারে প্রায় দুই মাস সময় নিয়েও কোনো কাগজ দেখাতে পারেনি। নাজিম উদ্দিন কাগজপত্র দেখাতে না পেরে আমাদেরকে হয়রানী করার জন্য গত ২৫ জানুয়ারী ২০২১ইং তারিখে আদালতে বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। যার এমপি মোকদ্দমা নং-৩৮/২০২১। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মারধরের অভিযোগ এনে ভূমিদস্যু নাজিম উদ্দিনে ভাই নুরউদ্দিন বাদী হয়ে ভোলা থানায় আরও একটি অভিযোগ দায়ের করেন। যার নং-৭৫১, তাং-১৬-২-২১ইং। আমাদের জমিতে যাতে না যেতে পারি সে জন্য নাজিম উদ্দিন দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদেরকে হয়রানী ও ভয়ভতী প্রদর্শন করছে। আমরা বর্তমানে তাদের হুমকি ধামকির ভয়ে নিরাপত্তাহীন জীবন যাপন করছি।
মো. জামাল হোসেন আরো জানায়, নাজিম উদ্দিন গংরা টাকা ও ক্ষমতার জোরে আমাদের জমিতে জোরপূর্বক বাড়িঘর নির্মান করে বসবাস করছে। নাজিউদ্দিন গংরা ক্যাডার ও দুষ্টপ্রকৃতির লোক, তারা স্থানীয় কোনো শালিস মানে না। আমরা গরীব হওয়ায় তারা টাকার জোরে আমাদের জমি জোর করে দখল করে আছে। একই সাথে তারা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে আমাদেরকে দুটি মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী ও বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদর্শন করছে। আমরা ভূমিদস্যু নাজিম উদ্দিনের কবল থেকে বাঁচতে চাই এবং আমাদের জমি উদ্ধারে প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।
এব্যাপারে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনের কাছে বক্তব্য নিতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোন বক্তব্য দিতে পারবো না। আপনারা যা ইচ্ছা লিখেন। এই বলে নাজিম উদ্দিন সাংবাদিকদের এরিয়ে চলে যান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ আবুল বশার বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে আমরা একাধিকবার শালিস বৈঠকে বসেছি। আমরা ফয়সাল চেষ্টা করে ব্যার্থ হয়েছি। তবে দুই পক্ষ কাগজপত্র নিয়ে আসলে আমরা ইউপি চেয়ারম্যান ও গন্যমান্যদেরকে নিয়ে সমাধানের চেস্টা করবো।
ভেদুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হাই মাস্টার বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে আমরা কয়েকবার শালিশে বসেছি। মৃত আঃ মান্নানের জমি দীর্ঘদিন ধরে নাজিম উদ্দিন দখল করে আছে। কিন্তু কিভাবে নাজিম উদ্দিন ওই জমি দখলে আছে সেটার কাগজপত্র দেখাতে পারিনি।

ফেসবুকে লাইক দিন

আর্কাইভ

মার্চ ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« ফেব্রুয়ারি    
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  

সর্বমোট ভিজিটর

counter
এই সাইটের কোন লেখা অনুমতি ছাড়া কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ!
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।