সৌদি থেকে দেশে ফিরে আত্মহত্যা করলেন সেই আসমা
নিউজ ডেস্ক, আমাদের ভোলা.কম।
সময়ের কণ্ঠস্বর ডেস্ক- সংসারের অভাব ঘুচাতে সৌদি আরব গিয়েছিলেন আসমা বেগম। মাস তিনেক যেতে না যেতেই তার ওপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। প্রাণ বাঁচতে ধরা দেন পুলিশের হাতে। দেশে ফিরেও তিনি ভুলতে পারেননি ভয়াবহ দিনগুলোর কথা।
তার ওপর যে পাশবিকতা হয়েছে সেটি তাকে ফিরতে দেয়নি স্বাভাবিক জীবনে। চিরতরে যন্ত্রণা ভুলতে তাই বেছে নেন আত্মহননের পথ। ২০ নভেম্বর ঘরের আঁড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের দেওয়ান আলীর মেয়ে আসমা বেগম। ১৯ বছর বয়সি আসমা তিন বোন, এক ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট। আসমাকে হারিয়ে পরিবারে এখন চলছে শোকের মাতম।
পারিবারিক সূত্র জানায়, আসমার পরিবার সিলেটে ভাড়া বাসায় থাকত। সংসারে সচ্ছলতার আশায় আসমা ঢাকায় গার্মেন্টে চাকরি নেন। সেখানে প্রায় তিন বছর চাকরি করার পর মাস ছয়েক আগে সুযোগ পেয়ে পাড়ি জমান সৌদি আরবে। সেখানে গিয়ে প্রথম তিন মাস ১৮ হাজার টাকা করে বাড়িতে পাঠান। এরপর থেকে তার উপর নেমে আসে অমানুষিক নির্যাতন। বাঁচতে গিয়ে নিজেই সেখানকার পুলিশের কাছে ধরা দেন। গত ২৭ অক্টোবর সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেন। দেশে এসেও অস্বস্তিতে ছিলেন আসমা। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া আসমা আরও যন্ত্রণার মধ্যে পড়েন মানুষের নানা কথায়। কোনোভাবেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছিলেন না। তাই মানসিকভাবে খুব বেশি ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।
অবশেষে মরে গিয়ে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি নিলেন আসমা। গত ২০ নভেম্বর রাতে ভগ্নিপতি হোসেন মিয়ার নন্দীপাড়ার বাড়িতে ঘরের আঁড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
আসমার মৃতু্য নিয়ে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই তার লাশ দাফন করা হয়েছে।
আসমার বোন আনোয়ারা বেগম জানান, চিপস আনার কথা বলে তাকে বাইরে পাঠায় আসমা। এসে দেখেন দরজা আটকানো। পরে ঘরে ঢুকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে আসমাকে উদ্ধার করে সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আসমার মা রহিমা বেগম জানান, সৌদি আরব থেকে আসার পরই আসমাকে মনমরা দেখা যায়। সৌদিতে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছিল সে। সে যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরেই আসমা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন টিটু জানান, মেয়েটি মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে ছিল। মানসিক তৃপ্তির জন্য তাকে বোন জামাইয়ের বাড়িতে পাঠানো হলে সেখানেই সে আত্মহত্যা করে। মানসিক যন্ত্রণা থেকেই সে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পরিবারের কোনো অভিযোগ ছিল না।
সূত্র – সময়ের কন্ঠস্বর