সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা নেই ভোলার ৫ হাসপাতালে
বিশেষ প্রতিনিধি, আমাদের ভোলা ।
সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা নেই ভোলার পাঁচ হাসপাতালে। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা এসব রোগীরা চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ছেন।
কেউ আবার বাধ্য হয়ে বেদে বা ওঝাদের শ্মরণাপন্ন হচ্ছেন। এতে সাপে কাটা রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি বাড়ছে।
এছাড়া হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীদের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকও নেই। এতে ঠিকমত চিকিৎসা সেবাও পাচ্ছেন না রোগীরা।
দ্বীপজেলা ভোলার ১৮ লাখ মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে এ হাসপাতালগুলো প্রতিষ্ঠা হলেও সাপে কাটা রোগীদের ভ্যাকসিন সংকটে চিকিৎসাসেবাবঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ছুটতে হচ্ছে ভোলা অথবা বরিশাল।
অন্য রোগীর চেয়ে সাপে কাটা রোগীদের সংখ্যা কম হলেও খুব শিগগিরই হাসপাতালে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা সিভিল সার্জন।
তিনি বলেন, বিষধর সাপ না হলে রোগীদের ভ্যাকসিন দেওয়া অনেকটা ঝুঁকিপূর্ণ। তবে চিকিৎসকগণ রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা এবং অজারভেশন করে থাকেন। তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন।
দৌলতখানে ৫০ শয্যার হাসপাতালে ১০টি ভ্যাকসিন থাকলেও বোরহানউদ্দিন, লালমোহন, চরফ্যাশন, তজুমদ্দিন ও মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেই কোনো ভ্যাকসিন। ভ্যাকসিন না থাকায় ওইসব এলাকার রোগীরা চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়ছেন। তবে জেলা সদর হাসপাতালে ভ্যাকসিন থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শোভন কুমার বশাক বলেন, আমাদের হাসপাতালে ৫ মাস ধরে সাপে কাটা রোগীর ভ্যাকসিন সরবরাহ নেই। যদি সাপে কাটা রোগী আসে তাহলে আমাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। তাদের রেফার করা হয় ভোলা সদর হাসপাতালে।
তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্কা কবির সোহেল জানান, দীর্ঘদিন ধরে তজুমদ্দিন হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীর ভ্যাকসিন নেই।
জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরা। এখানে রয়েছে ৫০ শয্যার একটি হাসপাতাল। এ উপজেলা থেকে জেলা সদরে আসতে নৌপথ ব্যবহার করতে হয়। দিনের বেলা ভোগান্তি নিয়ে রোগী আনা-নেওয়া করা হলেও রাতের বেলায় জেলা সদরে আসার কোনো ব্যবস্থা নেই। এতে ওই সব এলাকার মানুষ চরম ঝুঁকিতে আছেন। বিশেষ করে সাপে কাটা রোগীর ঝুঁকি অনেক বেশি।
ভোলার সিভিল সার্জন ডা. কেএম শফিকুজ্জামান বলেন, সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খুব দ্রুত ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে। এছাড়াও চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের স্টোর কিপার মনিরুল ইসলাম জানান, জেলায় ১২০ পিস ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে প্রতিটি উপজেলায় ২০টি করে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে। এছাড়াও সদর হাসপাতালে ২৫০টি ভ্যাকসিন মজুদ রয়েছে।