শুভ জন্মদিন তোফায়েল আহমেদ

========================
কয়েক দিন পূর্বে দাপ্তরিক প্রয়োজনে ফিল্ড ট্যুরে গিয়েছিলাম ভোলায়। সেখানে স্বাধীনতা জাদুঘর দেখে আমি সত্যি অভিভূত। আর এ জাদুঘরের যিনি স্বপ্ন দ্রষ্টা তিনি আর কেহ নন ভোলার বাঙলা বাজারের কৃতি সন্তান গণ মানুষের কন্ঠস্বর এবং বারংবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য শ্রদ্ধেয় জনাব তোফায়েল আহমেদ।
তিনি আজকের এইদিনে, ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে (২২ অক্টোবরে) সমৃদ্ধ জনপদ ভোলায় জন্মগ্রহণ করেন।
ভোলার কোড়ালিয়া গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মৌলভী আজহার আলী, মা ফাতেমা বেগম। তিনি ১৯৬০ সালে ভোলা সরকারি হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে ১৯৬২ সালে আইএসসি পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মৃত্তিকা বিজ্ঞানে এমএসসি ডিগ্রী লাভ করেন।
ব্যতিক্রমি এ রকম মানুষ বোধহয় খুব কমই থাকেন যারা নিজেদেরকে- মন্ত্রিত্ব, দলীয় পদপদবী, খ্যাতি, জশ, বিত্ত বৈভব পরিচয়ের বাইরে উঠে নিজেদেরকে সবকিছু ছাপিয়ে টপকিয়ে যেতে পারেন অনন্য পরিচয়ের এক উচ্চমার্গে । শুধুমাত্র নামই তাদেরকে উর্ধে তুলে রাখে। একনামে চেনে দেশের জনগণ।
জননেতা তোফায়েল আহমেদ ঠিক
তেমনই একজন মানুষ। একটি প্রজন্মের ইতিহাস, একজন ব্যক্তিত্ব। একটি প্রতিষ্ঠান। একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতা।
তিনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পাঁচ দফা জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের একজন অন্যতম সদস্য এবং তিনি ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর একান্ত ঘনিষ্ঠতম যে ব্যক্তি বা জন তিনি তোফায়েল আহমদ। মেধা মনননে মন মানষিকতায় নির্মোহ জনহিতৈাষি সাদা মনের একজন মানুষ।
ছাত্র রাজনৈতির প্রজ্ঞায় এমন উচ্চতার, নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদ এখন খুবই বিরল। ১৯৬৬-৬৭ মেয়াদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের (বর্তমানে সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) নির্বাচিত সহ-সভাপতি (ভিপি) ছিলেন।
১৯৬৮-৬৯-এ গণজাগরণ ও ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন তিনি ডাকসুর ভিপি হিসেবে সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয় লাভ করেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে মুক্তিযুদ্ধে তিনি মুজিব বাহিনীর অঞ্চল ভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত চার প্রধানের একজন ছিলেন।
৬৯ এর গণ অভ্যুথ্যানের প্রবাদ পুরুষ, ডাকসুর ভিপি তোফায়েল আহমেদই জাতির পিতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী শেখ মুজিবুর রহমানকে তখন বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন।
স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পরবর্তী কালে ১৪ জানুয়ারি ১৯৭২ তারিখে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায় বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সচিবের দায়িত্ব লাভ করেন।
তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসাবে ১৯৭৩, ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬,২০০৮ ও ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় লাভ করেন। ১৯৯৬ সালে তিনি সরকারের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব প্রাপ্ত হন।
তিনি দীর্ঘদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
সুদীর্ঘ কর্মজীবনের নানান চিত্রপটে সমৃদ্ধ করে গড়ে তুলেছেন স্বাধীনতা জাদুঘর ভোলায়। বাঙলাবাজারে মায়ের জন্য নির্মিত মসজিদের পাশে ত্রিতল বিশিষ্ঠ আধুনিক দৃষ্টিনন্দন ভবন, অডিটরিয়াম সহ জাদুঘর নির্মাণ করেছেন। যেখানে বাঙলার মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের গৌরবোজ্জল ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
আগামি প্রজন্মের জন্য এ এক অনন্য সৃষ্টি। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সঙ্গে, স্বাধীন বাঙলার বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর একজন সহযোদ্ধা ও সঙ্গী হিসাবে চিরদিন বেঁচে থাকবেন তোফায়েল আহমেদ বাঙলার কাদামাটির মানুষের হৃদয়ে।
প্রবাদ প্রতিম এই মানুষটির জন্মদিন আজ। শুভ জন্মদিন তোফায়েল আহমেদ, প্রিয় নেতা । আপনার সুস্থ , সুন্দর ও নিরাময় দীর্ঘ জীবন কামনা করছি।