ভোলায় ডােনেটস ক্লাবের পথচলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, আমাদের ভোলা.কম।
ওরা কয়েক জন যুবক। প্রতিনিয়তই রাস্তায় নামে মানব সেবা ও জনকল্যাণের উদ্দেশ্যে। ওদের কাজ অসহায়, মুমূর্ষ,প্রসূতি মা, অপারেশন জনিত কারনে অসুস্থ রোগীদের প্রয়োজনীয় রক্ত ম্যানেজ করে দেওয়া। কখনো নিজেরা আবার কখনো পরিচিত বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয় স্বজন ও পরিচিত জনদের কাছ থেকে রক্তদাতা জোগাড় করে সেবা করে মুমূর্ষ রোগীদের। “ গিভ ব্লাড সেভ লাইফ” এই স্লোগান নিয়েই তাদের পথ চলা। ডোনেটস ক্লাব নামে তাদের সংগঠনের নাম করণ করা হলেও রাজু ভাইয়ের লোক হিসেবেই তাদের অধিক পরিচিতি।
মো: রাজু (২৮) নামের এই যুবকের একান্ত প্রচেষ্টায় এই সংগঠনের পরিচিত ও বিকাশ। এই সংগঠনের কাজ হলে অসহায় মুমূর্ষ রোগীদের বিনামূল্যে রক্তের ডোনার জোগার করে দেওয়া। ভোলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও
বে-সরকারি ক্লিনিক গুলোতে এই সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতি মাসেই প্রায় শতাধিক রোগীকে বিনামূল্যে রক্তে জোগার করে দেওয়া হয়।
এই সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান পরিচালক মো: রাজুর নেতৃত্বেই সংগঠনটির পথচলা। রাজুর সাথে এই মানব সেবামূলক কাজে সহযোগীতা করেছে একঝাক তরুন সেচ্ছাসেবক। এরা সবাই ছাত্র। এই উদ্যমী তরুনরা নিজেদের বন্ধুবান্ধব পাড়া প্রতিবেশী,আত্মীয় স্বজন ও সহপাঠীদের থেকে তাদের রক্তের গ্রুপের তথ্য সংগ্রহ করে এবং তাদেরকে উৎসাহ প্রদান করে সেচ্ছায় বিনামূল্যে রক্তদানে। এই তরুন সদস্যরা বিভিন্ন যায়গায় নিরবে প্রচার প্রচারনা ও তথ্য সংগ্রহ করে ব্লাড ডোনার সংগ্রহ করে। বর্তমানে সংগঠনটির কাছে প্রায় ১হাজার এর বেশি রক্তদাতা সদস্য রয়েছে। যারা ইতিপূর্বে কয়েকবার করে রক্তদান করে ছিলো। সক্রিয় দাতা সদস্য ছাড়াও আছে আরো অনেক সদস্য। এই তরুনদের মধ্যে সালমান,শাহাদাত,তানভীর ,নাজমুল আলম জীম,রিয়াজ,নাহিদ, আবদুল্লাহ হিল কাফি,ফাহাদ,ইসতিহাক সহ কয়েক জন।
এই সংগঠনটির পরিচালক মো: রাজুর সাথে কথা বললে তিনি জানান এই সংগঠন গঠনের পেছনের ইতিহাস। প্রায় ৮ বছর আগে রক্তের অভাবে এক অসহায় রোগীর করুন অবস্থা দেখে তার এই পরিকল্পনা। পরবর্তীতে ভোলার মতো স্থানে পেশাদার কোন সংগঠন প্রতিষ্ঠা করতে না পারলেও তরুনদের মধ্যে সৃষ্টি করেতে পেরেছেন নব উদ্দীপনা। তিনি তার সংগঠনের নতুন রক্তদাতা সদস্যদের উৎসাহ যোগান রক্তদানে।
তিনি বলেন, ভোলাতে পেশাদার কোন রক্তদানকারী সংগঠন না থাকায় ভোলার রোগীদের রক্তের প্রয়োজন হলে তারা ব্যাপক অসুবিধার সম্মুখীন হন। বর্তমানে প্রসূতি মায়েদের সিজার এর প্রবনতা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় রক্তের চাহিদা প্রচুর বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু এখনো ভোলার মানুষের মাঝে রক্তদান করার তেমন মানসিকতা তৈরী হয়। তাই এখনো অল্পকিছু রক্তদানকারীর উপরেরই আমাদের বেশী নির্ভর করতে হয়। আমরা ছাড়াও ভোলাতে আরো কয়েকটি সংগঠন আছে যারা এ কাজের সাথে সম্পৃক্ত। তারাও আমাদের মতো রক্তদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে ব্যাপক হিমশিম খায়। আমাদের সংগঠনের সদস্যরা রক্তদানে উৎসাহের জন্য ব্যাপক কাজ করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো ভোলার তরুন সমাজ এই কাজটিতে আরো এগিয়ে আসবে যাতে রক্তের অভাবে যেন কারো কষ্ট পেতে না হয়।
এছাড়াও সংগঠনটির পক্ষ থেকে ইতিপূর্বে অনেক গরীব অসহায় রোগীদের আর্থিক ভাবেও সহযোগীতার হাত বাড়িছে সংগঠনটি। এই সংগঠনটি মানব সেবায় আরো এগিয়ে যাবে এই প্রত্যাশা সকলের।