ভোলায় সাংবাদিকদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর প্রণোদনা বিতরণে বিতর্ক, ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড়

বিশেষ প্রতিনিধি ।

করোনা কালিন সময়ে সারাদেশে সাংবাদিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে বিশেষ প্রনোদনা দেয়া হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার ১৯ অক্টোবর ভোলায় ও সাংবাদিকদের মাঝে ওই প্রনোদনার চেক বিতরণ করা হয়। এটা প্রকাশ হওয়ার পরপরই ব্যাপক আলোচনা আর সমালোচনার জন্ম দেয় পুরো জেলা জুড়ে। বিশেষ করে কারা এ তালিকা করেছে, কাদেরকেই বা তালিকায় রাখা হয়েছে এটা এখন আলোচনার প্রধান বিষয়। তালিকা যারাই করেছেন তারা কি ভোলার সকল উপজেলায় কর্মরত পেশাদারদের নিয়ে তালিকা করেছেন, নাকি তাদের পছন্দ অনুযায়ী অর্থাৎ যারা তাদেরকে (তালিকা প্রনয়নকারীদের) ম্যানেজ করতে পেরেছেন সেসব লোকদেরকে তালিকায় স্থান দিয়েছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে যারা এ তালিকা করেছেন সেখানে কতজন পেশাদার সাংবাদিক রয়েছেন ? ভোলার একটি পত্রিকা ব্যাতিত প্রকাশিত অন্য ৩টি দৈনিক পত্রিকার কর্তৃপক্ষের কাউকে পর্যন্ত জানানো হয়নি। বিষয়টি এখন ভোলার টক অব দ্যা জেলায় পরিণত হয়েছে।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে সেই তালিকায় পেশাদার সাংবাদিক নয় এমন লোকও রয়েছে। আছে হোন্ডার ড্রাইভার এমনকি একজন টিভি রিপোর্টারের ৩-৪ জন ক্যামেরা পার্সন। প্রশ্ন উঠাই স্বাভাবিক একজন টিভি রিপোর্টারের কতজন ক্যামেরা পার্সন প্রয়োজন ? পুরো ভোলা জেলায় ৩ থেকে ৪ শত কয়েকশত পেশাদার সাংবাদিক রয়েছেন, অথচ প্রনোদনা পেয়েছে মাত্র ৭৫ জন। এদের মধ্যে পেশাদারের চেয়ে অপেশাদার সাংবাদিক-ই বেশি। এ তালিকায় পেশাদার সাংবাদিকদের নাম না আসায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। সাথে সাথে ঘৃনাও প্রকাশ করছেন যারা এ তালিকা তৈরী করেছেন। এ নিয়ে ভোলার সকল উপজেলার কর্মরত পেশাদার সাংবাদিকরা সোস্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। তাতে ধুয়ে দিচ্ছেন ওই একচোখা ও স্বার্থান্বেশী মহলকে, যারা তালিকা তৈরী করেছেন।
ক্ষোভের সাথে একাধিক পেশাদার সাংবাদিকগণ জানান, যখন তালিকা করা হয়েছে, তখন বর্তমানে ভোলা প্রেসক্লাবের দায়িত্বে যারা রয়েছেন তারা আমাদেরকে জানায়নি। এটা তারা অন্যায় করেছে। তারা শুধু তাদেরকেই জানিয়েছেন, যারা তাদের তোষামদি করতে পারবে, চামচামি করতে পারবে এমন লোকদেরকে। শুধু তাই নয়, ওই তালিকায় এমন লোকেও স্থান মিলেছে যারা পেশাদার সাংবাদিক নন। এমন স্বজনপ্রীতি ও নিন্দনীয় কাজ করার জন্য আমরা তাদেরকে ধিক্কার জানাই। আমরা এমন স্ব-ঘোষিত কমিটি চাইনা, যারা পেশাদার সাংবাদিকদের মুল্যায়ন করতে জানেনা।
বিভিন্ন উপজেলার একধিক পেশাদার সাংবাদিক ক্ষোভের সাথে জানান, ভোলায় বসে যারা তালিকা করেছেন তারা আমাদের উপজেলার কাউকে একবারের জন্যও বিষয়টি জানায়নি। তাদের এ মনগড়া কার্যক্রমের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
ভোলার সংবাদ এর সম্পাদক মো. ফরহাদ হোসেন বলেন, করোনা কালীন ভোলা জেলার সাংবাদিকদের মাঝে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে প্রণোদনার যে চেক বিতরণ করা হয়েছে তা নিয়ে জেলা ও উপজেলার সাংবাদিকদের কাছে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ও প্রশ্নবৃদ্ধ? কখন এ-ই তালিকা করার নির্দেশ আসলো ? কারা এই তালিকা প্রনয়ণে তরি গরি করে জমা দিলেন তা অনেক পেশাদার সাংবাদিকদের অজানা। আবার তালিকাতেও নাকি স্বজন প্রীতি করার কারণে বহু পেশাদার সাংবাদিক, সরকার দলীয় সমর্থক অনেক সাংবাদিক ও করোনা আক্রান্তসহ অস্বচ্ছ সংবাদকর্মীরাও বাদ পড়েছেন। এটা খুব দুঃখ জনক। যা ভোলার সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এর কাছে জেলার পেশাদার সাংবাদিকরা এমনটা আশা করেনি।
দৈনিক ভোলা টাইমস পত্রিকার সম্পাদক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, প্রেসক্লাব থেকে আমাকে বা আমার পত্রিকার কাউকেই বলা হয়নি। তবে উচিত ছিলো পেশাদার সাংবাদিক বা অসহায় সাংবাদিককে প্রণোদনার টাকা দেওয়া।
ভোলার অপর দৈনিক পত্রিকা ভোলার বাণীর সম্পাদক মুহা: মাকসুদুর রহমান বলেন, আমাকে একবারের জন্যও বলেনি, বল্লে হয়ত আমার পত্রিকার কিছু পেশাদার সাংবাদিকের নাম প্রস্তাব করতাম। আমি চাই যেসকল পেশাদার সাংবাদিকরা বাদ পরেছে তাদের নামে প্রস্তাব পাঠানো হোক।

ফেসবুকে লাইক দিন

আর্কাইভ

মার্চ ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« ফেব্রুয়ারি    
 
১০১১১২১৩১৪১৫
১৬১৭১৮১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭২৮২৯
৩০৩১  

সর্বমোট ভিজিটর

counter
এই সাইটের কোন লেখা অনুমতি ছাড়া কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ!
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।