‘পৃথিবীর ফুসফুস’ পুড়ছে
ডেস্ক রিপোট, আমাদের ভোলা.কম।
আগুনে পুড়ে উজাড় হচ্ছে অ্যামাজন। এবারের তীব্রতা ভয়াবহ। আগুণের সর্বগ্রাসী তাণ্ডবে ছাই হচ্ছে অ্যামাজনের সবুজ। ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র জানিয়েছে তাদের পাওয়া তথ্য মতে এবারের অগ্নিকান্ডের ঘটনা এ যাবতকালের সবচেয়ে বেশি।
এবছর এখন পর্যন্ত অ্যামাজন জঙ্গলে ৭২ হাজার ৮৪৩ টি অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। যার ব্যাপ্তি অ্যামাজানের অর্ধেকেরও বেশি এলাকা জুড়ে। ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র জানিয়েছে এই অগ্নিকান্ডের সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮০ শতাংশ বেশি। তবে সবচেয়ে উদ্বেগের খবর হলো গত সাত দিনে ৯ হাজার ৫০০ বারেরও বেশি আগুন লেগেছে অ্যামাজনে।
এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা (নাসা) তাদের সর্বশেষ এক টুইটে জানিয়েছে অ্যামাজন থেকে আসা ধোঁয়ার কারণে ব্রাজিলের বিভিন্ন প্রদেশের আকাশ কালো হতে শুরু করেছে। এর আগে সোমবার (১৯ আগস্ট) ব্রাজিলের রাজধানী সাও পাওলো দিনের বেলায় এক ঘণ্টা ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছিলো। সেই ধোঁয়ার উৎপত্তি ছিলো রাজধানী থেকে ২৭০০ কিলোমিটার দূরের অগ্নিকান্ড।
এমন ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের জন্য সংরক্ষণবাদিরা ব্রাজিল সরকারের নীতিকে দায়ী করছেন। তাদের দাবি সরকারের কৃষি বিষয়ক নতুন নীতির কারণেই পুড়ে উজাড় হচ্ছে অ্যামাজন।
অ্যামাজন জঙ্গলকে পৃথিবীর ফুসফুস বলা হয়ে থাকে। পৃথিবীর মোট অক্সিজেনের ২০ শতাংশই উৎপাদন করে অ্যামাজন। আর সেকারণেই অ্যামাজনে ব্যাপক মাত্রার অগ্নিকান্ডের ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের। এই মাত্রার অগ্নিকান্ডে বন উজাড় হওয়ার ফলে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম হুমকির মুখে পড়বে বলে দাবি করা হচ্ছে।
অ্যামাজন দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশের অংশ রয়েছে তবে এর তিনভাগের দুই ভাগই ব্রাজিলে। তাই ব্রাজিল সরকারের গৃহীত বিভিন্ন নীতিকেই অগ্নিকান্ডের কারণ বলে অভিযোগ করা হচ্ছে। ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো চলতি বছরের জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পরই রেকর্ড সংখ্যক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে অ্যামাজনে। পরিবেশবাদীদের দাবি, বন সংরক্ষণে অতীতের সরকারগুলোর নীতির বিপরীতে অবস্থান নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বলসোনারো।
তবে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো সন্দেহ করছেন বন উজাড় করতে এনজিওগুলো অ্যামাজন জঙ্গলে গিয়ে আগুন ধরাচ্ছে।
অ্যামাজন জঙ্গল ত্রিশ লাখ জাতের উদ্ভিদের আবাসস্থল। এবং দশ লাখ অধিবাসীও বাস করেন জঙ্গলে।