আজ কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ এর ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী
নিউজ ডেস্ক , আমাদের ভোলা.কম।
আমি থাকবো না। এই পৃথিবী পৃথিবীর মতই থাকবে। বর্ষা আসবে, জোছনা হবে। কিন্তু সেই বর্ষা দেখার জন্য আমি থাকবো না, জোছনা দেখার জন্য আমি থাকবো না। এই জিনিসটা আমি নিতে পারি না”
বাংলা সাহিত্য ও চলচ্চিত্র জগতের বরেণ্য ব্যক্তিত্ব, নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১২ সালের এই দিনে সবাইকে কাঁদিয়ে তিনি নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে পরলোক গমন করেন।
বিংশ শতাব্দীর গল্পের জাদুকরের মৃত্যুতে কি নিউইয়র্ক শহর অশ্রুসিক্ত হয়েছিলো? হয়তো নিউইয়র্কের আকাশে সেদিন ছিলো না কোনো চাঁদ, ছিলো না মায়াবতী জোৎস্না, চান্নিপসর রাত। বৃষ্টিবিলাসের বদলে ছিলো ঝকঝকে রোদ। অথচ তার মৃত্যুর দিন বাংলাদেশের মানুষের মতো অশ্রসিক্ত ছিলো বাংলার রাতের আকাশ।
২৪ জুলাই হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর চার দিন পর চিরনিদ্রায় শায়িত হন তার নিজ হাতে গড়া গাজীপুরের নুহাশপল্লীর লিচুতলায়।
বাবা শহীদ ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়শা ফয়েজের ঘর আলো করে ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনায় জন্মগ্রহন করেন হুমায়ুন। পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে। রসায়ন শাস্ত্রের শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
কালজয়ী উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ ও ‘শঙ্খনীল কারাগারের’ মধ্য দিয়ে বাংলা সাহিত্যে শক্তিশালী এক কথাসাহিত্যিকের আগমনী বার্তার জানান দেন হুমায়ূন আহমেদ। তার প্রকাশিত সাহিত্যকর্ম প্রায় তিন শতাধিক। গল্প বলার এক নতুন ধারায় তার সব গল্প-উপন্যাসই যেমন জনপ্রিয় তেমনি জনপ্রিয়তা পেয়েছে হিমু, মিসির আলী, বাকের ভাই ও রূপার মতো অসাধারণ সব চরিত্র।
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীও তার সৃষ্টিকর্মের অন্তর্গত। ধরা হয় বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর জনপ্রিয়তা তিনিই শুরু করেন। তার রচিত প্রথম সায়েন্স ফিকশন “তোমাদের জন্য ভালোবাসা”।
সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি তিনি একসময় মনোনিবেশ করেন চলচ্চিত্র জগতে। শুরু করেন চলচ্চিত্র ও নাটক নির্মাণ। সেজন্য তিনি অধ্যাপনা ছেড়ে দেন। আগুনের পরশমণি, কোথাও কেউ নেই, শঙ্খনীল কারাগার, দুই দুয়ারি, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেঁটুপুত্র কমলা তার সৃষ্টিকর্মের মধ্যে উল্লেখযোগ্য।
হুমায়ূন আহমেদের ক্যান্সার ধরা পড়ে ২০১১ সালে। কেউ হয়তো তখন ভাবেনি হঠাৎ করেই এভাবে ফুরিয়ে যাবে তার জীবন। নুহাশপল্লীর গাছ, ফুল, পাখি, ঘাসের সঙ্গে মিশে আছেন গল্পের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ।