ভোলায় অব্যবস্থাপনায় বিসিক এর বেহাল দশা
![](https://amaderbhola.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
ইয়াছিনুল ঈমন, আমাদের ভোলা.কম।
ভোলা বিসিক শিল্পনগরী নানা অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে। এর সাথে যোগ হয়েছে খানাখন্দে ভরা সড়ক আর গ্যাস সংযোগের অভাব। এ সকল সমস্যায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বিসিকের ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিনের সমস্যার কারণে বড় বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকেই।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভোলায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও শিল্পায়নের লক্ষ্যে শহরের খেয়াঘাট সড়কের চরনোয়াবাদ চৌমুহনী এলাকায় গড়ে তোলা হয় ভোলা বিসিক শিল্পনগরী। ১৪ দশমিক ৪৫ একর জমিতে ১৯৯২ সালে শিল্পনগরী স্থাপন করে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। ৯৩ টি প্লটের মধ্যে বরাদ্দ হয়ে যায় ৭১ টি অথচ গড়ে ওঠে মাত্র ৯ টি শিল্প প্রতিষ্ঠান যার মধ্যে চালু আছে মাত্র ৫ টি। ফলে গড়ে ওঠেনি প্রত্যাশিত কর্মসংস্থান।
দীর্ঘদিন ধরে ভোলা বিসিক শিল্প নগরীর অভ্যন্তরের প্রায় সবকটি সড়কই খানাখন্দে ভরপুর। বর্ষায় এর ভোগান্তির মাত্রা বেড়ে হয় দ্বিগুণ। এতে বিঘিœত হচ্ছে পণ্য পরিবহন, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন শিল্প মালিকরা।
এদিকে বিসিক কর্মকর্তাদের অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনার কথা তুলে ধরে খাঁন ফ্লাওয়ার মিল এর মালিক জামাল খাঁন বলেন, বিসিকের প্রায় সকল রাস্তাগুলোই
ভাঙ্গা পড়ে আছে বহুদিন ধরে কর্মকর্তারা কোন নজর দিচ্ছেন না এছাড়াও ভোলায় পর্যাপ্ত গ্যাস মজুত থাকার পরও আমরা গ্যাস সংযোগ পাচ্ছি না।
তিনি আরও অভিযোগ তুলে বলেন,আমি প্রায় ১ বছর আগে অন্য একজন মিল মালিক হতে বিসিক এর ১টি প্লট ক্রয় করে ৬ মাস হয়েছে উৎপাদনে গিয়েছি। কিন্তু বিসিক কর্মকর্তাদের বার বার বলার পরও পল্টের মালিকানা নাম পরিবর্তন করে আমার নামে কাগজ পত্র করে দিননি তারা। তাদের কাছে গেলে তারা এক এক বার এক এক রকম অযুহাত দেখান। আর প্লটটি আমার নামে না হওয়াতে আমি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আমার নর্মাল মিলটিকে অটো মিলে পরিণত করতে পারছি না।যদি বিসিক কর্মকর্তারা আর কয়েক মাস আমায় এভাবে ঘুরায় তাহলে আমার ব্যবসা ঘুটিয়ে চলে যেতে হবে।তাই খুব শিঘ্রই আমি এ সমস্যার সমাধান চাই।
এছাড়াও বিসিকের অন্যান্য মালিকরা জানান, রাস্তাঘাটের করুণ দশার কারণে তাদের মালামালের উৎপাদন ও বিপণন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে সড়ক ও গ্যাস সংযোগ ব্যবস্থাসহ বিসিক শিল্পনগরীর উন্নয়ন দাবি করেছেন তারা।
ভোলা বিসিক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব প্রাপ্ত) কাজী তোফাজ্জল হক এর সাথে ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, খাঁন ফ্লাওয়ার মিলের মালিক জামাল খাঁন জাহাঙ্গীর হক মানিক এর প্লটটি ক্রয় করেছেন। কাগজ পত্রের কিছু ত্রুটির কারণে তার নামে কাগজ পরিবর্তন হয়ে আসতে একটু বিলম্ব হচ্ছে। তবে আমরা প্লটটি মালিকানা নাম পরিবর্তন করে তার নামে করার জন্য ইতিমধ্যেই খুলনা আঞ্চলিক অফিসে প্রস্তাব পাঠিয়েছি এখন সেই কাগজ ঢাকা হেড অফিসে আছে খুব শিঘ্রই সে তার নামে কাগজ পেয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
ভোলা বিসিক এর উপ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এমাদুল হোসেন বলেন, আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। অচিরেই বিসিক শিল্প নগরীর সকল সমস্যা সমাধান হবে।
ভোলা জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম সিদ্দিকের কাছে বিসিকের বেহাল দশার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন বিসিকের সকল সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দশ দিয়েছি ও ইতিমধ্যেই আমরা সকল ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছি। বিসিকের আর কোন সমস্যা থাকবে না বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।