বিভিন্ন সময়ে হজ্ব বন্ধের পটভূমি

নিউজ ডেস্ক , আমাদের ভোলা.কম।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের ছোবলে বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের মতো সৌদি আরবকে বিচলিত অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। ইতোমধ্যেই পবিত্র দুই নগরী মক্কা-মদিনা সহ পুরো দেশে ঘোষণা করা হয়েছে লকডাউন।গত এক মাসের বেশি সময় ধরেই সৌদি আরবসহ অধিকাংশ আরব এবং মুসলিম রাষ্ট্রের মসজিদগুলো বন্ধ আছে। মক্কা-মদিনার পবিত্র দুই মসজিদে শুধু খুবই সীমিত আকারে অল্প কিছু মানুষের নামাজ পড়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সৌদি আরব এ বছর হজ বাতিল করার কথাও বিবেচনা করছে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে, এবং আল্লাহ না করুক, যদি পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তাহলে হজ বাতিল হওয়ার জোরালো সম্ভাবনা আছে।
যদি শেষ পর্যন্ত হজ বাতিল করতেই হয়, সেটা হবে প্রায় দেড়শ বছরের মধ্যে হজ বাতিলের প্রথম ঘটনা। হ্যাঁ, হজ বাতিল খুবই ব্যতিক্রম ঘটনা। কিন্তু এর আগেও বিভিন্ন সময় হজ বাতিল করা হয়েছিল।

প্রথমবার বাতিল হয়েছিল ৮৬৫ খ্রিস্টাব্দে, আব্বাসীয়দের সময়, ইসমাঈল বিন ইউসুফের মক্কা আক্রমণের কারণে।এরপর বন্ধ হয়েছিল ৯৩০ সালে। কট্টর শিয়া গ্রুপ কারমাতিদের আক্রমণে সে বছর ৩০,০০০ হাজি শহিদ হয়েছিল। তারা হাজিদেরকে হত্যা করে তাদের লাশ জমজম কুপে ফেলে দিয়েছিল। ফিরে যাওয়ার সময় তারা সঙ্গে করে হাজরে আসওয়াদ বাহরাইনে নিয়ে গিয়েছিল। পরবর্তীতে হাজরে আসওয়াদ পুনরুদ্ধার হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এক দশক হজ বন্ধ ছিল।৯৮৩ থেকে ৯৯০ সাল পর্যন্ত হজ বাতিল হয়েছিল রাজনীতির কারণে। ইরাক ও সিরিয়া ভিত্তিক আব্বাসীয় খিলাফত এবং মিসর ভিত্তিক ফাতেমীয় খিলাফতের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণে সেবার ৮ বছর পর্যন্ত হজ বন্ধ ছিল।শুধু যুদ্ধ-বিগ্রহ না, মহামারির কারণেও হজ বাতিল হয়েছিল। প্রথমে ১৮১৪ সালে হেজাজ প্রদেশে প্লেগের কারণে ৮,০০০ মানুষ মারা যাওয়ায় হজ বাতিল করা হয়।এরপর ১৮৩১ সালে ভারত থেকে যাওয়া হজযাত্রীদের মাধ্যমে মক্কায় প্লেগ ছড়িয়ে পড়ে এবং চার ভাগের তিন ভাগ হাজি মৃত্যুবরণ করে। ফলে সে বছর হজ বাতিল করা হয়। এছাড়াও ১৮৩৭ থেকে ১৮৫৮ সালের মধ্যে প্লেগ এবং কলেরার কারণে তিন বারে মোট ৭ বছর হজ বন্ধ ছিল।এবারও যদি হজ বন্ধ হয়, সেটা হবে খুবই দুঃখজনক একটা ঘটনা। কিন্তু একইসঙ্গে এটাও লক্ষ্যণীয়, অতীতেও হজ বাতিল হয়েছিল। ইসলাম অবাস্তব কোনো ধর্ম না, এলিয়েনদের জন্য আসা ধর্ম না। এটা মানুষের জন্য আসা ধর্ম। এবং মানুষের সাধ্যের বাইরে এখানে কিছু করতে বলা হয়নি।সুতরাং অনেকে যে রকম বক্তব্য দিচ্ছে, মসজিদ গেলে ভাইরাস আক্রমণ করবে না, সেগুলোর কোনো ভিত্তি নাই। খোদ হারাম শরিফেও আক্রমণ হতে পারে, সেখানে উপস্থিত হাজিরাও মারা যেতে পারেন, তাদের এবং পরবর্তীতে তাদের কারণে বিশ্বব্যাপী আরো বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণহানির আশঙ্কা থাকলে আলেম-ওলামারা হজ বাতিলের সিদ্ধান্ত দিতে পারেন। যেরকম সিদ্ধান্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আলেমরা দিয়েছেন মসজিদে নামাজ না পড়ার ব্যাপারে।

তথ্যসূত্র: হারাম শরিফের ওয়েবসাইট, মিডল ইস্ট আই, টিআরটি, দ্য নিউ আরব।

ফেসবুকে লাইক দিন

আর্কাইভ

এপ্রিল ২০২৪
শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
« মার্চ    
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০  

সর্বমোট ভিজিটর

counter
এই সাইটের কোন লেখা অনুমতি ছাড়া কপি করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ!
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।