হিন্দু বৃদ্ধার লাশ কাঁধে নিয়ে আড়াই কিমি. হেঁটে শ্মশানে মুসলিম যুবকরা
নিউজ ডেস্ক , আমাদের ভোলা.কম।
করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে গোটা বিশ্ব বিপর্যস্ত হয়ে পড়লেও এ মহামারী দমনে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এক করে দিয়েছে।
সেখানে করোনায় মারা যাওয়া এক হিন্দু বৃদ্ধার দেহ সৎকারে এগিয়ে আসলেন প্রতিবেশী কয়েকজন মুসলিম যুবক।
নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বৃদ্ধার মরদেহ শেষকৃত্যের জন্য আড়াই কিলোমিটার হেঁটে শ্মশানে নিয়ে যান তারা। কিন্তু ঝুঁকি নিতে চায়নি বৃদ্ধার স্বজনরা। তারা শেষযাত্রায় অংশ নেননি, এমনকি মরদেহের কাছাকাছিও যাননি।
সেই ঘটনার ছবি ভারতের সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক হারে ভাইরাল হয়েছে। টুইটারে, ফেসবুকে ওই মুসলিম যুবকদের সালাম জানাচ্ছেন নেটিজেনরা। অনেকে তাদের সত্যিকারের বীর বলে আখ্যা দিচ্ছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই ছবিতে দেখা গেছে, ওই বৃদ্ধার মরদেহ কাঁধে করে নিয়ে যাচ্ছেন মুসলিম যুবকরা। তাদের মুখে মাস্ক ও মাথায় ফেজটুপি।
ভারতের সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত সোমবার মারা যান ৬৫ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধা। কিন্তু লকডাউন চলায় তাকে সমাধিস্থ করতে নিয়ে যেতে কোনো বাহন পাওয়া যাচ্ছিল না। বৃদ্ধার ছেলেরাও মাকে শেষদেখা দেখতে আসতে পারছিলেন না। এ দিকে করোনায় মৃত্যু দেখে লাশের কাছেও ঘেঁষছিল না বৃদ্ধার স্বজনরা।
উপায়-আন্তর না দেখে প্রতিবেশী মুসলিম যুবকরাই এগিয়ে আসেন। তারাই কাঁধে করে ওই হিন্দু বৃদ্ধার দেহ শেষকৃত্যের জন্য আড়াই কিলোমিটার হেঁটে শ্মশানে নিয়ে যান। করোনাভাইরাস আতঙ্কে বৃদ্ধার শেষযাত্রায় অংশ নেননি আত্মীয়-স্বজনরা।
এ বিষয়ে স্থানীয় এক গণমাধ্যমকে মুসলিম যুবকদের একজন বলেছেন, আমরা উনাকে ছোটবেলা থেকে চিনতাম। আমাদের আদর করতেম। এখন যা করছি, তা আমাদের কর্তব্যের মধ্যেই পড়ে।
ঘটনার ছবি নিজের টুইটার হ্যান্ডলে শেয়ার করেছেন মধ্যপ্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ।
তিনি লিখেছেন, ‘এই ঘটনা সমাজে একটা উদাহরণ হয়ে রইল। এটাই আমাদের ভারতের সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছে। এই দৃশ্য পারস্পরিক সৌভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসাকে আরও দৃঢ় করবে।
সূত্র -যুগান্তর