ভোলায় গৃহকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ,পরিবারের দাবি হত্যা

বিশেষ প্রতিনিধি , আমাদের ভোলা.কম।
ভোলায় গৃহকর্তার রান্না ঘর থেকে গৃহকর্মীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার রাত ২টার দিকে শহরের পুরাতন যুগিরঘোল এলাকায় সুলতান মিয়ার বাসায় এ ঘটনা ঘটে। তবে গৃহকর্মীর পরিবারের অভিযোগ তাদের মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।
সরজমিনে জানা গেছে, বুধবার রাত ৩টায় গৃহকর্মী রোজিনা রান্না ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। সুলতান মিয়া ভোলা থানায় খবর দিলে পুলিশের একটি টিম রান্না ঘর থেকে রোজিনার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে। পরে তাকে ময়না তদন্ত করে ইলিশা ইউনিয়নে রোজিনার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হলেেএ রিপোট লেখা র্পযন্ত লাশ গ্রহণ করেনি। রোজিনার ভাই এর অভিযোগ তাকে সুলতান মিয়ার ছেলে জোবায়ের ও শ্যালক মিজান যৌন নির্যাতন করে গলায় ফাঁস দিয়ে রান্না ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে হত্যা করে। তারা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রোজিনা হত্যার বিচার দাবী করেন।
জানা গেছে, ২নং পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের চর আনন্দ পার্ট-১ গ্রামের বেছু মুন্সী সংসারের অভাব অনটনের কারনে ৭ বছর আগে তার মেয়ে রোজিনা আক্তার (১৬)কে শহরের পুরাতন যুগিরঘোল এলাকার সুলতান মিয়ার বাসায় কাজে দেয়। কাজে দেওয়ার পর থেকে শিশু গৃহকর্মী রোজিনাকে বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন করে আসছে সুলতান মিয়ার পরিবার। রোজিনার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন সময় তার সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে সুলতান মিয়ার পরিবার তাদেরকে যোগাযোগ করতে দেয়নি। সুলতান মিয়ার ছেলে জোবায়ের ও শ্যালক মিজানুর রহমান বিভিন্ন সময় রোজিনাকে যৌন নির্যাতন করতো। রোজিনাকে তার পরিবার একাধিকবার নেওয়ার চেষ্টা করলেও গৃহকর্ত্রী রোজিনাকে আটকিয়ে রেখে তার পরিবারকে তারিয়ে দিতো।
রোজিনার বড় বোন নাজমা আক্তার বলেন, আমার বোনকে সুলতান মিয়ার বাসায় কাজে দেওয়ার পর থেকে তারা আমার বোনকে মারধর করতো এবং বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন করতো। আমরা তাকে নিতে আসলে রোজিনাকে আটকিয়ে রেখে আমাদেরকে তারিয়ে দিতো। বুধবার রাতে সুলতান মিয়ার ছেলে জোবায়ের ও শ্যালক মিজানুর রহমান ধর্ষণ করে আমার বোনকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে। আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রোজিনা হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি।
এ ব্যাপারে সুলতান মিয়ার স্ত্রী নাহারুন বেগম বলেন, রোজিনা আমার বাসায় ছোট বেলা থেকে কাজ করে আসছে। আমরা তাকে অনেক আদর যত্ম করতাম। রোজিনা একটি ছেলের সাথে প্রেম করতো। তার প্রেমে বাঁধা পড়ায় সে বুধবার রাত ২টার দিকে আমাদের রান্না ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে সে আত্মহত্যা করে।আমরা দেখতে পেয়ে তার পরিবারকে জানাই। পোস্টমেডাম রিপোর্ট ও রোজিনার ফোনের কল রেকর্ড আসলেই পুরো বিষয়টা প্রমান হবে। তার পরিবার যদি আমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করে তা বিষয় খুব দুঃখজনক।
ভোলা সদর মডেল থানার (ওসি) ছগির মিঞা বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সাধারনত এটা একটা অপৃত্যুর (ইইউ ডিএস) মামলা হয়েছে। পোস্টমার্টেম রিপোর্ট হাতে পেলে বাকি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।