বেশি তাপমাত্রায় কি করোনাভাইরাস টিকতে পারে?
নিউজ ডেস্ক, আমাদের ভোলা.কম।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ইন্টারনেটে এই ভাইরাসের সংক্রমণ, প্রতিরোধ-প্রতিকার নিয়ে বিভিন্ন তথ্য ভেসে বেড়াচ্ছে।
এর মধ্যে যে কথাটি সবচেয়ে বেশি শোনা যাচ্ছে তা হলো, ২১-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় করোনাভাইরাস টিকতে পারে না। উদাহরণস্বরূপ বলা হচ্ছে চীন, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইতালির নাম। বলা হচ্ছে, এসব দেশে গড় তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। যে কারণে দেশগুলোতে করোনাভাইরাসের বিস্তার বেশি হয়েছে। বাংলাদেশের গড় তাপমাত্রা যেহেতু ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে তাই এখানে করোনার বিস্তার সম্ভব নয়।
এ ধরনের তথ্য যত বেশি ছড়াচ্ছে মানুষ তত বেশি বিভ্রান্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় তাপমাত্রাবিষয়ক তথ্য নিয়ে বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এই সংস্থার মতে, করোনাভাইরাস গরম এবং আর্দ্র্র যেকোনো পরিবেশেই বিস্তার লাভ করতে পারে। গরম আবহাওয়ায় করোনাভাইরাস বিস্তার লাভ করতে পারবে না- বিষয়টি গবেষণায় প্রমাণিত হয়নি। অতএব বেশি তাপমাত্রায় করোনাভাইরাস টিকতে পারবে না- এ কথা সত্য নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের সতর্কবার্তায় আরো জানিয়েছে, মানুষের শরীরের নিয়মিত গড় তাপমাত্রা ৩৫ সেন্টিগ্রেডের ওপর। তাই যারা গরমের দেশগুলোতে বসবাস করছেন বা ভ্রমণ করছেন তাদেরও করোনা আক্রান্ত দেশগুলোর মতোই প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
তাপমাত্রা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে পারে এটা ভেবে অনেকে বারবার গরম পানিতে গোসল করছেন। সতর্কবার্তায় এই বিষয়টিও উল্লেখ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সংস্থাটি এই অভ্যাস বন্ধ করার আহবান জানিয়েছে। কারণ গরম পানিতে গোসল কোনোভাবেই করোনা প্রতিরোধ করতে পারবে না। উপরন্তু এর ফলে শারীরিক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা আছে।
এ ছাড়া সংস্থাটি আরো কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্যের ব্যাপারে সতর্ক করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, কোন বয়সের মানুষ করোনাতে বেশি আক্রান্ত হতে পারে? অনেকে মনে করেন, শারীরিকভাবে সুঠম ও যুবক বয়সিদের করোনায় আক্রান্ত হবার ঝুঁকি কম। কিন্তু না। সব বয়সের মানুষের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে বয়স্ক মানুষের মৃত্যু ঝুঁকি বেশি। তাই সব বয়সের মানুষকে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
সতর্কবার্তায় থার্মাল স্ক্যানার নিয়েও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিবৃতি দিয়েছে। থার্মাল স্ক্যানার করোনা শনাক্তকরণের একমাত্র উপায় নয়। কারণ থার্মাল স্ক্যানার দেহের অতিরিক্ত তাপমাত্রা মাপতে পারে। এ অবস্থায় উচ্চ তাপমাত্রা আছে এমন কারো যদি সংক্রমণ ধরা না পড়ে তারও ঝুঁকি থেকে যায়। কারণ আক্রান্ত হওয়ার দুই থেকে দশদিন পরও এই ভাইরাস প্রকাশিত হতে পারে। তাই আক্রান্ত দেশ থেকে আগত নাগরিকদের করোনার লক্ষণ থার্মাল স্ক্যানারে শনাক্ত না হলেও কয়েকদিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
হাত ধোয়ার পরামর্শ
উপরোক্ত বিষয়গুলোর পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হাত ধোয়ার ওপর জোর দিয়েছেন। কারণ হাত ধোয়া হতে পারে করোনো প্রতিরোধের অন্যতম কার্যকরী উপায়। তাই প্রতিবার বাইরে থেকে ফেরার পর অন্তত বিশ সেকেন্ড জীবাণুনাশক দিয়ে হাত ধুতে হবে। পাশাপাশি হাত নাকে মুখে না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
সূত্র – রাইজিং বিডি