পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ, মোদিকে হুঁশিয়ার করে দিলেন উপদেষ্টা
ডেস্ক রিপোট, আমাদের ভোলা.কম।
ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা র-এর সাবেক প্রধান এ এস দুলাত বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারকে সতর্ক করে গত শুক্রবার বলেছেন, যুদ্ধ কোনো পিকনিক নয়। তিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কথিত বিকল্প হিসেবে আগ্রাসী কূটনীতির পথকে অগ্রাধিকার দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পরামর্শ দিয়েছেন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর উপদেষ্টা ও কাশ্মির বিশেষজ্ঞ এ এস দুলাতের এমন মতামত প্রকাশিত হয়েছে কংগ্রেস পার্টি পরিচালিত ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকায়।
পৃথক এক সাক্ষাৎকারে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মিরের পালওয়ামায় হামলায় কমপক্ষে ৪৪ জন সিআরপিএফ সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনার নিন্দা জানাই আমি। কিন্তু আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী তো একজন ভারতীয়, একজন কাশ্মিরী। হামলাকারী পাকিস্তানি নয়। বিতর্কিত রাজ্যের বিচ্ছিন্ন মানুষের হৃদয় ও মন জেতাই সরকারের লক্ষ্য হওয়া উচিত।
অনেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা করলেও যুদ্ধ অত্যাসন্ন বলে বিশ্বাস করেন না দুলাত। তিনি বলেন, আমি তেমন মনে করি না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তিনি সেনাবাহিনীকে স্বাধীনতা দিয়েছেন। কিন্তু বর্তমান সময়ে যুদ্ধ হলো বাজে জিনিস। আমি বিশ্বাস করি, যুদ্ধ বাদে আরো অনেক পথ খোলা রয়েছে। এমনকি মুম্বাইয়ে যখন হামলা হয়েছিল, তখনো সম্ভবত এখনকার চেয়েও বেশি একটি যুদ্ধের আবহ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যুদ্ধে যাননি। তাই মোদিকেও তার সুযোগগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। যুদ্ধ হলে তার পরিণাম ভোগ করতে হবে জনসাধারণকে। যুদ্ধ কোনো পিকনিক নয়।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের পরে দুই দেশের মধ্যে সত্যিকারের কোনো যুদ্ধ হয়নি। কারগিল যুদ্ধ ছিল সীমিত অপারেশন। তা ছাড়া ভাগ্যক্রমে সেটা হয়েছিল এমন একটি উচ্চতায় যেখানে যুদ্ধ হলে বেসামরিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। কিন্তু লাহোরে অথবা অমৃতসরে এমন কি মুজাফফরাবাদে যদি বোমা হামলা হয়, তাহলে আমরা কি তার পরিণতির জন্য প্রস্তুত আছি? ১৯৭১ সালের যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্র এখন পাল্টে গেছে।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পি চিদাম্বরম সাক্ষাৎকারে দাবি করেছিলেন- ‘হামলাকারী জায়েশ-ই-মহম্মদ দ্বারা প্রভাবিত বা উদ্বুদ্ধ ছিলেন, এটি সত্য হতে পারে। কিন্তু যুবকদের যদি সশস্ত্র সংগঠনের দিকে ঠেলে দেয়া হয়, সীমান্তে আমরা যাই কিছু করি না কেন, আমরা পাকিস্তানকে দমাতে যে পদক্ষেপ নেই না কেন, অনুপ্রবেশ বন্ধে আমরা যত কিছুই করি, তাতে কোনো ফল হবে না।’
দুলাত বলেছেন, আমাদের কাশ্মিরী উপত্যকার মানুষের হৃদয় ও মন জয় করতে হবে। বাজপেয়ী সবচেয়ে খারাপ আক্রমণের মুখোমুখি হয়েছিলেন। যেসব হামলার মধ্যে রয়েছে কারগিলের সংঘর্ষ, পার্লামেন্ট আক্রমণ এবং কান্দাহারের কাছে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনের বিমান ছিনতাই। কিন্তু তিনি সব ঘটনা ঠাণ্ডা মাথায় মোকাবেলা করেছিলেন।
সূত্র: ডন।