ঢাকা মেডিকেলের বিছানায় পরিচয়হীন ফুটফুটে কিশোর
অনলাইন ডেস্ক, আমাদের ভোলা.কম।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের অতিরিক্ত-৫ নম্বর বিছানা। সাদা গেঞ্জি গায়ে শুয়ে আছে ফুটফুটে এক কিশোর। মাথায় অস্ত্রোপচার হয়েছে। জ্ঞান ফেরেনি। ১২ দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছেলেটির পরিচয়ও এখনও জানা যায়নি।
হাসপাতালের ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের নার্সিং স্টেশনের ঠিক সামনের বিছানাতেই শুয়ে আছে এই কিশোর। হাতে স্যালাইন লাগানো; নাকে খাবারের নল। মাথার পুরোটা সাদা ব্যান্ডেজ দিয়ে মোড়ানো।
পাশের বিছানার রোগীর মা জানান, এই কিশোরের কোনো স্বজন তার সঙ্গে নেই। আশপাশের রোগীর স্বজনরা, স্টাফ, নার্সরাই তার দেখাশোনা করেন। এখনও তার জ্ঞান ফিরেনি। একটি বারও চোখ মেলে তাকায়নি সে। শুধু মাঝেমাঝে এপাশ ওপাশ হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই কিশোরকে নিউরো সার্জারির ১০০ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। প্রথমে ওয়ার্ডের অজ্ঞাতনামা রোগীদের স্থানে তাকে রাখা হয়। পরে তাকে দেখে সবার মায়া হওয়ায় ভালো পরিচর্যার জন্য নার্সিং স্টেশনের ঠিক সামনের বিছানায় আনা হয়।
১০০ নম্বর ওয়ার্ডের নার্সিং ইনচার্জ মৃণাল চন্দ্র দাস বলেন, ছেলেটির নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি। গত ৮ তারিখ রুবেল মৃধা নামের এক ব্যাক্তি তাকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওর ভালো দেখভালের জন্যই ওকে স্টেশনের সামনের বিছানায় রাখা হয়েছে। এখানে থাকায় সবার নজর পড়ে ওর দিকে। সবাই দেখাশোনা করে। ওর মাথার ব্রেইনের অপারেশন করা হয়েছে। মাথায় প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছিলো। মাথার সিটিস্ক্যান করানো হয়েছে। এখন শুধু স্যালাইন ও খাবার ঔষধ চলছে। তবে এখনও তার জ্ঞান ফিরেনি। তবে কিছুক্ষণ পরপর নড়াচড়া করছে।
মৃণাল জানান, নিউরো সার্জারি বিভাগের এক চিকিৎসক তার জন্য ২ হাজার টাকা দিয়েছেন। এছাড়া ওয়ার্ডের সবাই তার খাবার, ঔষধের জন্য টাকা-পয়সা দেয়। এ দিয়েই তার চিকিৎসা চলছে। সবাই আন্তরিকভাবেই তার দেখাশোনা করছে।
যোগাযোগ করা হলে কিশোরকে হাসপাতালে নিয়ে আসা রুবেল মৃধা বলেন, ‘আমি নরসিংদী সদর হাসপাতাল এলাকায় বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের চালক হিসেবে কাজ করি। গত ৮ তারিখ দুপুরে কয়েকজন লোক ওই কিশোরকে সদর রেলস্টেশন থেকে আহত অবস্থায় সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে ওইদিন বেলা ৩ টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে আমি তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাই। তবে সে কিভাবে আহত হয়েছিলো তা আমি বলতে পারি না। ওর পরিচয় জানার চেষ্টায় আমরাও নরসিংদী সদর এলাকায় অনেকের সঙ্গেই যোগযোগ করছি।’
সূত্র : পিবিএ