জীবন সংগ্রামে একই পরিবারের তিন প্রতিবন্ধী সহোদর
![](https://amaderbhola.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
সাইফুদ্দিন ছোটন,আমাদের ভোলা.কম।
জীবন মানেই যুদ্ধ। যন্ত্রণাময় এই জীবন সংসারে জীবিকার তাগিদে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছেন একই পরিবারের প্রবিন্ধী তিন সহোদর। আমাদের সমাজে প্রতিবন্ধী মানেই ভিক্ষা করবে। তার সহযোগী হবে পরিবারের সুস্থ্য অন্য একজন। এমন চিত্রই অহরহ। প্রবল আত্মবিশ্বাস আর সন্তানদের ভবিষ্যত এই চিন্তায় চিরাচরিত প্রথাকে ভেঙে জীবনকে জয় করছে তারা।
ভোলার বোরহানউদ্দিনের প্রতিবন্ধি তিন সহোদর শারিরিক অক্ষমতা উপেক্ষা করে পৌর বাজারে ব্যবসা করে জীবনের চাকা অনবরত ঘুরাচ্ছেন। তাদের গ্রামের বাড়ি উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডস্ত সাজী বাড়ি। মূলধন সমস্যা তবু ও কারো করুণায় জীবন চালাতে রাজি নন।
হাসিমুখেই বললেন নিজেদের কষ্টে উপার্জিত অর্থ দিয়ে সংসার চলছে। সংসারে প্রাচুর্যতা না থাকলে ও সুখের অভার নেই।
বোরহানউদ্দিন পৌর বাজারে কথা হয় তাদের সাথে। আলাপচারিতায় জানা যায়, পক্ষিয়া ৮নং ওয়ার্ডের তাদের বসবাস। বাবা আ. বারেকের অনেক আগেই মারা যায়। মা হনুফা বেগম তিন ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বিপাকে পড়েন। সংসারের হাল ধরেন প্রতিবন্ধি ৩ ছেলে। শুরু করেন ব্যবসা। ৪০ বছর বয়সি বড় ছেলে নয়া মিয়া ১২ বছর বয়সে টাইফেড জ্বরে প্যারালাইসড হন। হাত পা অকেজো হয়ে পড়ে। নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে ক্রেঁচে ভর করে হেঁটে ছোট পরিসরে সপিং ব্যাগ বিক্রি শুরু করেন। এখন পৌর বাজারে দোকান দিয়ে একই ব্যবসা করছেন। ছোট ভাই মো: নাগর (৩০) বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। সে একই জায়গায় বিদ্যুতের ফ্যানের কয়েল, মটর বাধাঁই করেন। মেজ ভাই মো: শাহাজাহান (৩২) মানসিক সমস্যা থাকলেও তিনি ছোট পরিসরে চায়ের দোকান করে জীবিন চালিয়ে যাচ্ছে। আয় কম হলেও অন্যের করুনা ছাড়াই বেচেঁ আছেন এটাই তাদের সান্তনা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মো. নয়া মিয়া জানান, বিভিন্ন এনজিও থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়ে ব্যবসা শুরু করছি। অনেক কষ্ট করে জীবন চালাই। প্রতিবন্ধীদের মতো ভিক্ষা করলে সমাজে বুক উচু করে বাস করা যায় না। তাছাড়া ভবিষ্যত প্রজম্ম সমাজে আত্মসন্মান নিয়ে চলতে পারবে না। আমরা যে কষ্টে আছি, সন্তানরা যেন সে কষ্ট না পায়। নিজেদের চেষ্টায় এখনও সমাজে টিকে আছি। সন্তানদের লেখা পড়া শিখাচ্ছি। তারপর সমাজের কিছু লোক আমাদের সংগ্রামী জীবনকে নানাভাবে তুচ্ছ করে।
ব্যবসা করতে গিয়ে পুজিঁ সল্পতার সমস্যার কথা বলে তিনি জানান, যদি সরকারী কোন সহযোগিতা পাওয়া যায় তাহলে ব্যবসার পরিধি বাড়িয়ে আরও ভাল ভাবে জীবন যাপন করা যেত।