ভোলায় বিনামূল্যের বই পায়নি দুর্গম চরের শিক্ষার্থীরা

মো: মহিবুল্লাহ আযাদ, আমাদের ভোলা,কম।
ভোলায় শহর এলাকার শিক্ষার্থীরা বছরের প্রথম দিন সরকারের বিনামূল্যের নতুন বই পেলেও পায়নি দুর্গম বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে রয়েছে লালমোহন উপজেলার কচুয়াখালীর তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। ভোলার লালমোহন ও পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলার সীমানায় দুর্গম চরাঞ্চলের শিশুদের শিক্ষা বিস্তারে এখানে স্কুল গড়ে উঠলেও নেই শিক্ষক।
জেলার এমন বিচ্ছিন্ন ১৯টি চরের অনেক স্থানে নেই স্কুলও। কোনো কোনো চরে এনজিওদের পরিচালিত স্কুল থাকলেও বছরের প্রথম দিন বই পায়নি এসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা। বুধবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিখিল চন্দ্র হালদার জানান, বই প্রথমদিন না গেলেও দু-চারদিনের মধ্যে পৌঁছে যাবে। তিনি জানান, জেলায় এক হাজার ৪৪ প্রাথমিক স্কুলের ৩ লাখ ২৩ হাজার ৩৪০ শিক্ষার্থীর জন্য বই বরাদ্দ আসে ১৪ লাখ তিন হাজার ২৩৬টি বই।
অপরদিকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জাকিরুল হক জানান, জেলায় মাধ্যমিক, দাখিল, এবতেদায়ি ও ভোকেশনাল (কারিগরি) পর্যায়ের ৫১৩ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এক লাখ ৩০ হাজার ১০৯ শিক্ষার্থীর জন্য বই দেয়া হয় ৩৮ লাখ ৮ হাজার ৩২৭টি বই।
বছরের প্রথম দিনেই এসব বই স্কুলে স্কুলে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দেয়া হয়। কিছু স্কুলে নানা কারণে প্রথমদিন দিতে না পারলেও পরেরদিন দেয়া হয়েছে। তবে আগেই দুর্গম এলাকায় বই পৌঁছে দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়। মঙ্গলবার ভোলা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে বই বিতরণের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক। তিনি জানান, বছরের প্রথমদিন শতভাগ বই বিতরণের জন্য তাদের আগে থেকে প্রস্তুতি রয়েছে।
নিশ্চিত করতে মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে। লালমোহনের পশ্চিম চর উমেদ ইউনিয়নের কচুয়াখালী এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে বুধবার বিকাল নাগাদ ওই এলাকার বই পায়নি শহীদ আওলাদ হোসেন সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
এমনকি ওই স্কুলে দু’জন শিক্ষককে পদায়ন করা হলেও তারা যোগ দেননি। ওই চরের শিশু শিক্ষার্থী আল-আমিন, মারুফ, রুপা, নিপা, আনোয়ার হোসেন, ফাহিমা, উম্মে কুলসুম, নার্গিস, রোকেয়ার মতো কয়েক শিশুর ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কিত অভিভাবকরা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল হাসান রুমি জানান, বিষয়টি অতি দ্রুত গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রেখে বই বিতরণ ও শিক্ষক যোগদান নিশ্চিত করা হবে।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তারাও জানান, চরাঞ্চলে শিক্ষা বিস্তারে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে। জেলার বিচ্ছিন্ন ১৯ চরে শিক্ষা বিস্তারের উপযোগী পরিবেশ না থাকায় কয়েক হাজার শিশু ওই বয়সেই নদীতে মাছ ধরা কাজে নেমে পড়ে। এদের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে দাবি জানান ভোলার নাগরিক কমিটির সভাপতি মো. আবু তাহের।